চুল্লু কাকা
()
About this ebook
একবিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকের এক বাস্তব আবেগঘন স্বপ্নের সোনাঝরা ফসল 'চুল্লু কাকা' উপন্যাস। জীবন সংগ্রামের সেই বাস্তব কাহিনি, বস্তুত উপস্থাপিত হয়েছে কোলাজ রীতিতে। কখনও সাদাসিধে ন্যারেটিভ, কখনও ব্যক্তি মননের গুপ্ত ডায়েরি, কখনও-বা ধূলি-ধূসর ও মলিনতায় মোড়া বিস্ময়কর কিছু মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বারংবার উন্মোচিত হয়েছে এই উপন্যাসের পাতায়-পাতায়। প্রচলিত ধারা হতে সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী এক কাহিনিধারা এই 'চুল্লু কাকা' উপন্যাস। বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে এইরূপ আখ্যান একেবারেই আনকোরা। প্রেম-অপ্রেম, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও বাস্তবতার পরস্পর বিপরীত গতির মধ্যখানে সংগ্রামরত 'পশুর' নদীর নোনা মাটির গভীর হতে উঠে আসা আলোহীন এক মানুষ কীভাবে 'চুল্লু কাকা'য় পরিণত হল এবং কীভাবে সেই 'চুল্লু কাকা' নিজেকে আত্মাহুতি দিয়ে তার প্রেম-ব্যর্থতা, কর্মদক্ষতা ও লেখনীর গুণে কবি-গল্পকার-উপন্যাসিক হয়ে উঠল তারই এক জ্বলন্ত সোপান এই 'চুল্লু কাকা' উপন্যাস।
International Publishing Centre
Moumita Bahubalindra spent her childhood at historical place Moyna Garh. She had born in Kolkata. Her Educational qualification are. M.Sc, D.EL.ED., PhD . She has complited Diploma course in Computer from Webel and also complited the " Bachik Sudhakar" Degree in Recitation. Her subject is anthropology. She is a Teacher, Poet and Journalist. She has written Poems, News, views in the different magazines and Newspapers. She was Associated with "Kalantar", " Jago Bangla", "Biswa Bangla", "Ekdin" etc newspapers. She has attended the program of F.M and "Ananya" program of D.D.-7. She has recited poems at 'Sishir Moncho', 'Nandan', "West Bengal Banbla Acadamy", 'MadhuSudan Moncho', 'InduMati Hall' of Jadavpur Univercity. She has published two Books namely " Samuderer Nil Swapna" "ChandraDhanaya". She was awarded with 'Vivekjoyti Samman' from Channel Vision, Sera Samman -2018 from All India Legal Forum of New Delhi, Kisore Kumar Award from Kolkata. She has got a certificate from Asiatic Society regarding 'Manuscript Reading' and associated with many Social works. She has own Magazine "The Tadanta News".She has working Experience from West Bengal State Health Projects.
Read more from International Publishing Centre
বাংলা ছোট গল্প Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsআজও খুঁজে ফেরা Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsকবিতা বিচিত্রা Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsবনসাই বৃক্ষে ছায়া শরীর Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsস্থিতি Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsস্বনির্বাচিত কবিতা Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsছায়াপথ Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsআমার কবিতা Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsপুড়ছি যখন.- Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsনৈঃশব্দের প্রতিবাদ্ Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsকাগজের প্রতিবাদ Rating: 0 out of 5 stars0 ratingsনোনা স্রোত Rating: 0 out of 5 stars0 ratings
Related to চুল্লু কাকা
Reviews for চুল্লু কাকা
0 ratings0 reviews
Book preview
চুল্লু কাকা - International Publishing Centre
তাপস বিশ্বাস
সম্পাদক
অধ্যাপক ইউনুস মোল্লা
ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটি
––––––––
C:\Users\user\AppData\Local\Temp\ksohtml4860\wps2.pngইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার
20/2B, কামাক স্ট্রিট, প্রথম তলা, কলকাতা-700016
47F/1, যাদবপুর সেন্ট্রাল রোড, কলকাতা-700032
E-mail : ipcworld100@gmail.com
প্রথম প্রকাশ
কলকাতা বইমেলা, ২০২৪
প্রচ্ছদ শিল্পী: নেহারানি সরদার
––––––––
কপিরাইট
© ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার
No part of this book can be copied, published and reprinted without the prior permission and approval of International Publishing Centre. All contents of this book is protected as per copyright law.
উৎসর্গ
ড. বাবুল হোসেন
ও
ড. মৈত্রেয়ী সরকার
প্রকাশকের কথা
একটি উপন্যাসের নাম ‘চুল্লু কাকা’ হতে পারে, এটা আমার জ্ঞানের পরিধির বাইরে ছিল। ‘চুল্লু কাকা’র উন্মেষ ‘নীলাঞ্জনা’ প্রকাশনার আহ্বানে দীর্ঘ একবছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে চলতে থাকা বারোটি খণ্ডে প্রকাশিত উপন্যাস প্রতিযোগিতার পরিণত রূপের সঞ্চারে। উপন্যাসটির রূপকার, আধুনিক সময়ের তরুণ সাহসী এবং যুক্তিবাদী এক লেখক তাপস বিশ্বাস। গতানুগতিক বাংলা উপন্যাসের নামকরণ সহ এ উপন্যাসের আঙ্গিকের কোনওরকম মেলবন্ধন নেই। উপন্যাসে স্বয়ং উপন্যাসিক আলো-আঁধারি খেলায় সর্বদা নিমগ্ন। উপন্যাসে তাঁকে চেনা বড় দায়, তাঁকে বুঝা বড়ই দায়! উপন্যাসে হঠাৎ এই তিনি কলম হাতে কাহিনির মধ্যে ঢুকে পড়েছেন, আবার হঠাৎ এই তিনি উপন্যাসিকের হাতে কলম তুলে দিয়ে চুপিসারে সরে পড়েছেন। সত্যি কথা বলতে কি, তাপস বিশ্বাসের ‘চুল্লু কাকা’ উপন্যাসের কাহিনি ও বাস্তবতাকে স্মরণে রেখেই প্রকাশক হিসাবে ভাগ্যদেবতাকে সঙ্গে নিয়েই সাহিত্যের উথাল দরিয়ার বুকে ঝাঁপ দিয়েছি। হাবুডুবু খেতে-খেতে আমরা অথই দরিয়ার কিনারা পেতে চাই। কিনারে দাঁড়িয়ে আপনারা তাপস বিশ্বাস সহ আমাদের ভিজে এই ক্লান্ত হাত দু’খানি একবার ধরুন। আপনাদের সকলের নির্মল হাত ধরে আমরা সাহিত্যের অথই দরিয়ার পাড়ে উঠতে চাই। — ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা সহ,
অধ্যাপক ইউনুস মোল্লা
ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার
সূচিপত্র
১. অচেনা এক আলো ... 6
২. আলো-আঁধারে লুকোচুরি ... 18
৩. জীবননদীর খেলাঘর ... 31
৪. নাতবউয়ের ইতিকথা ... 42
৫. ঘূর্ণিপাকের গোলকধাঁধা ... 56
৬. বে-নী-আ-স-হ-ক-লা ... 68
৭. আত্মপ্রকাশ ... 80
৮. রাগ-অনুরাগ ... 97
৯. সাদা জিন ও কালো জিন ... 110
১০. বিষণ্ন ফাগুন ... 121
১১. মেঘে ঢাকা আলো ... 133
১২. শতাব্দীর সেরা― করোনা ... 145
১
অচেনা এক আলো
সেই রাত ফাগুনের দোল পূর্ণিমার রাত, বাইরে জ্যোৎস্নার আলোয় পরিপূর্ণ। মৃদুমন্দ বাতাস, সুরভি ফুলের গন্ধ, ঘড়ির কাটায় এগারোটা বাজার ঢংঢং শব্দ। সাইকেল চেপে সহপাঠী অনির্বাণ কারও সাথে ফোনে কথা বলতে-বলতে গেটে দাঁড়িয়ে ফোনটা আমার হাতে দিয়ে বললে, আমি ঘরে পৌঁছে গেছি, এই কথাটি বলে দাও।
ফোনটি কানে নিতেই অপরিচিতা এক মেয়েলি কন্ঠ,
— হ্যাঁ, ঘরে পৌঁছে গেছে।
— সত্যি বলছেন আপনি?
— কেন সত্যি বলব না? আমি তো ঘর হতেই বলছি।
— শুনেছি তিনকুলে কেউ নেই ওর, তাহলে আপনি কোথা হতে কোন উদয় হলেন ফাগুনের এই আকাশ ভরা তারার স্নিগ্ধময়ী রাতে?
— কেন? আমি ভাড়াটিয়া। এই তো সবেমাত্র দিনকতক হল এ-বাড়িতে এসে উঠেছি। সারাদিন পথে-ঘাটে ভ্যান চালাই, রাত দশটা বাজলেই ঘরে ঢুকে চুল্লু পান করে নিশ্চিন্তে ঘুমাই!
— কেন চুল্লু পান করেন?
— দুঃখ ভুলতে!
— কীসের এত দুঃখ আপনার?
— দুঃখের কি আর সীমা-পরিসীমা আছে? অসীমের নীল আকাশের মতো ব্যাপ্তি...
— আপনার কেউ নেই বুঝি?
— কী করে থাকবে? ছিল যে জন, বহুদিন আগে ছেড়ে চলে গেছে তারার দেশে!
— বেশ তো, তোমারও কেউ নেই, ওরও কেউ নেই, দু’জনে মিলেমিশে ঘর বাঁধো সুখের।
— ঠিক আছে, তাই হবে।
— তা, কী নামে ডাকব তোমায়?
— সারাটা দিন যখন চুল্লু পানে চুর হয়ে থাকি, সেইরকম একটা নাম খুঁজে নিতে পারো তুমি।
— তাহলে তোমায় আমি ‘চুল্লু কাকা’ বলেই ডাকি।
— বেশ তো, অতি উত্তম নাম মোর! এ নামেই আমি ধন্য, এ নামেই অমি পুণ্য।
পরদিন রাত দশটা বাজতে না বাজতেই ফোন বেজে উঠল,
— হ্যালো, চুল্লু কাকা।
— হ্যাঁ, শুনছি, বলো।
— কেমন আছ তুমি?
— পেটভরে চুল্লু পানে বহাল তবিয়তে বিছানায় শুয়ে আছি।
— তুমি কেন চুল্লু পান কর? তুমি আর কখনও চুল্লুতে গলা ভেজাবে না। কোনওদিন আর চুল্লু ছোঁবে না।
— কী আর করব বলো, রাত হলেই চুল্লু যে আমায় হাতছানি দেয়। ও যে আমার জীবনের সাথী। ওকে ছাড়া রাত যে আমার কিছুতেই কাটে না।
— তুমি আমায় কথা দাও, আর কোনওদিন চুল্লু ছোঁবে না।
— চাঁদের এই স্নিগ্ধময়ী রাতে তুমি যদি আমায় একটা গান শোনাতে পারো তাহলে কথা দিচ্ছি আগামীকাল হতে আর কখনও চুল্লুতে গলা ভেজাব না।
— সত্যি বলছ তুমি?
— একদম তিন সত্যি বলছি, কথার কোনও নড়চড় হবে না।
— কী গান শুনতে চাও তবে বলো?
— দুঃখ ভুলতে যে কোনও গান।
— আজ তবে নিজের লেখা ও সুরে একটা গান শোনাই।
— শোনাও।
— "ভাঙা ঘরে চাঁদের আলো
ফাগুনের এই নিশিতে প্রাণে দিলে আলো।"
সত্যি, সে এক হৃদয় মুগ্ধ করা গান! আঁধার রাতে মায়াবী চাঁদ শুধু আলোই দিলে, ধরা দিলে না...
যে রাত্রে সহপাঠী অনির্বাণ আমার কাছে আসে না, নিজের বাড়িতেই রাত কাটায়, সেই রাত্রে নতুন এক কৌশল অবলম্বন করতে হয় আমাকে,
— হ্যালো, চুল্লু কাকা, সেই বহু রঙের মানুষ অনির্বাণ কি ঘরে ঢুকেছে? রাত তো বারোটা বেজে গেছে।
— মনে হচ্ছে আজ আর অনির্বাণ এই বাড়িতে ঢুকবে না। ঐ যে বাণীপুরে কোনও এক বন্ধু আছে না ওর, তার এক বোনের বাড়িতে রাত্রে কেউ নাকি থাকে না, সেখানেই নাকি দুই বন্ধু মিলে স্নাতকোত্তর পড়াশুনা করে, রাত্রে সেখানেই থাকে।
— হ্যাঁ গো চুল্লু কাকা, ওর মুখে মাঝেমধ্যে বাণীপুরের ঐ বন্ধুর কথা অনেক শুনেছি। ঐ বন্ধুই মনে হয় ওকে মাদুলি, কবজ, তুকতাক, ঝাড়ফুঁক করেছে, ল্যাঠামাছ পোড়া খাইয়েছে। দেখবে কোনও একদিন, ওই বন্ধুই ওকে মস্তবড় কোনও বিপদে ফেলবে!
— একদম ঠিক বলেছ তুমি, সত্যিই ওকে তাবিজ, কবজ, ল্যাঠামাছ পোড়া খাইয়েছে। রাতদিন মুখে শুধু ওই বাণীপুরের বন্ধু আর বাণীপুরের বন্ধুর গুণকীর্তন করা। একদিন বাণীপুরের বন্ধুর পোড়া কপালে ঝাড়ু মেরে দিও তো তুমি।
— হ্যাঁ গো চুল্লু কাকা, তাই দিতে হবে ভাবছি। এবার আসুক আমার কাছে, দেখাব এবার মজা, কত ধানে কত চাল, ওর একদিন কি আমার একদিন।
পরদিন সত্যিই ঝাড়ু পড়ল বাণীপুর বন্ধুর পোড়া কপালে,
— হ্যালো চুল্লু কাকা, আজ সময় মতো ঘরে ঢুকেছে রংবাজ অনির্বাণ? আজ বাণীপুর বন্ধুর পোড়া কপালে ঝাড়ু মেরে দিয়েছি।
— ওহে শাঁকচুন্নি, বাণীপুর বন্ধুর পোড়া কপালে ঝাড়ু মেরে বিদায় দেওয়ার সাথে-সাথে, অনির্বাণও যে আমার পোড়া কপালে ঝাড়ু মেরে ওর ঘর হতে আমাকে চিরতরে বিদায় করে দিয়েছে।
— সে কী কথা! তুমি এখন কোথায় চুল্লু কাকা?
— কেন, স্টেশনের পাশে ওই যে বটতলা আছে না, ওখানেই ভ্যানের উপর নিশ্চিন্তে শুয়ে আছি। মাথার উপর অসীমের উন্মুক্ত নির্মল নীলাকাশ, লক্ষ কোটি তারা আমায় দেখে হাসছে... রাত্রির পূর্ব দিগন্তজুড়ে রাঙা আভায় পূর্ণিমাচাঁদ উঠছে, অগণিত তারা মিটমিট জ্বলছে।
— বাণীপুর বন্ধুর অপমান করেছি বলে চুল্লু কাকাকে ঘর হতে তাড়িয়ে দেওয়া— ইতর, ছোটলোক... ওর একদিন কি আমারই একদিন। কালই শেষ বোঝাপড়া হবে ওর সাথে আমার। চুল্লু কাকা, তুমি একদম ভেঙে পড়ো না, আমাদের বাড়িতে থাকবে, আমি মাকে বলে সব ব্যবস্থা পাকা করে রাখব। বাণীপুরের ঐ বন্ধু, ওর মাথাটা চিবিয়ে খেয়েছে একেবারে। বাণীপুরের ওই বন্ধুকেও আমি ছাড়ব না কোনওদিন, ওর বারোটা বাজিয়ে তবেই আমার শান্তি।
— না না শাঁকচুন্নি, তুমি ওই বাণীপুর বন্ধু সম্পর্কে কিছু আর বলতে যেও না, হিতে আরও বিপরীত হতে পারে।
— হয় হোক চুল্লু কাকা, বাণীপুর বন্ধুর কপালে এবার আমি আগুন জ্বালাব! আমি রুদ্রমূর্তি মহাকালী, বাণীপুরের ওই বন্ধুকে খুন করে, ওর কালো রক্ত পান করে, আমার ক্ষুধাতুর পিপাসা মিটাব, এই আমি বলে রাখলাম তোমায় চুল্লু কাকা।
সকালে প্রতিদিনের ন্যায় সবেমাত্র চেম্বারে এসে বসেছি,
— হ্যালো চুল্লু কাকা, কোথায় তুমি?
— কেন, ভ্যানস্ট্যান্ডে যাত্রীদের অপেক্ষায়।
— আজ থেকে তুমি আমাদের বাড়ির সিঁড়িঘরে থাকবে, মাকে বলে সব ব্যবস্থা পাকাপাকি করে নিয়েছি। ওই ছোটলোক রংবাজ অনির্বাণের বাড়িতে তোমাকে আর থাকতে হবে না।
— এমন কথা মুখে আনতে নেই শাঁকচুন্নি। তোমরা কেন ছোটলোট হতে যাবে? ছোটলোক তো আমরাই, আমারা যারা জাতিতে নমশূদ্র, যাকে বলে খাঁটি চাঁড়াল, তার উপর আবার বাঙালও। আমরা তোমাদের ঘরে উঠলে তোমাদের জাত চলে যাবে গো, চিরতরে জাত চলে যাবে, তোমাদের ঘর অপবিত্র হয়ে যাবে। তোমার মা তো সারা শহর খুঁজে-খুঁজে অবশেষে ব্রাহ্মণ এই অনির্বাণকে তোমার পড়ার জন্য নির্বাচিত করল, যাকে কিনা তুমি তোমার রাঙা মনটা কাব্যের রঙিন খাতায় বেঁধে নিলে।
— দেখ চুল্লু কাকা, এইসব আজেবাজে একদম বকবে না। এইসব কথা শুনতে আমার একদম ভালো লাগে না। এই পৃথিবীতে সবাই আমরা মানুষ, নীল আকাশের একই ছাদের তলায় আমাদের বাস, একই রক্তে-মাংসে গড়া আমরা মানুষ, একই রক্ত বইছে মোদের শিরা-উপশিরায়। এ যুগের মানুষ এখন আর ওই সব কুসংস্কারে আস্থা রাখে না, বিশ্বাস করে না। সেই রংবাজ ছোটলোকটাও এখন আমার ফোনটাও আর তুলছে না। উচ্চ শিক্ষিত সব, মাস্টার হয়েছে, টিউশন পড়ায়, শিক্ষা দেয়। দেহটাকে আগে শুদ্ধ কর মাস্টার, মনটাকে আগে পবিত্র কর, তবেই তো নিজেকে মানুষ বলে পরিচয় দিবি। হিংসুটে সব, হিংসুটে।
এইসব কথা শুনতে না শুনতেই হঠাৎ এক রোগী এসে চেম্বারে ঢুকলেন। এবার বললাম,
— আমার ভ্যানের প্যাসেঞ্জার এসে গেছে শাঁকচুন্নি, যাত্রী সকল সবাই ভ্যানে উঠে পড়েছে, আমি তাদের নিয়ে চললাম অশোকনগর মুক্তিধাম শ্মশানঘাটে। রাত্রে কথা হবে শাঁকচুন্নি, রাত্রে ফোনে সব কথা হবে।
পরদিন সহপাঠী অনির্বাণ এল রাত্রে, এমন সময় ফোন বেজে উঠল,
— হ্যালো চুল্লু কাকা, কোথায় তুমি, এলে না কেন?
— আমি ফাগুনের উন্মুক্ত আকাশ তলে এই তো বেশ আছি সুখে। ফাগুনের স্নিগ্ধ রাত্রির আকাশের পূর্ণিমাচাঁদ আমায় দেখে যেন বলছে—
ওহে কবি, ভুবনে তুমিই তো আছ একমাত্র সুখে।"