Discover millions of ebooks, audiobooks, and so much more with a free trial

Only $11.99/month after trial. Cancel anytime.

নোনা স্রোত
নোনা স্রোত
নোনা স্রোত
Ebook308 pages1 hour

নোনা স্রোত

Rating: 0 out of 5 stars

()

Read preview

About this ebook

         একবিংশ শতকের বাংলার মাটিতে যে সকল বঙ্গ সন্তান একাগ্ৰ চিত্তে বাংলা ভাষায় সারস্বত চর্চাকে ব্রত রূপে গ্রহণ করেছেন অথবা বাঙালিয়ানার ক্যানভাসে মননশীলতা ও একাগ্রতার ডিঙিতে ভেসে সৃষ্টিশীলতায় মগ্ন হয়েছেন, সেইসব জ্ঞান পিপাসুদের মধ্যে অন্যতম হল তরুণ সাহিত্যিক 'তাপস বিশ্বাস'। চটকদার অপসংস্কৃতি ও চটুল সাহিত্য সৃষ্টির মখমলে ঢাকা রাজপ্রাসাদে বসে নয়, তার সাহিত্য সৃষ্টি কাঁচের বালুচরে, ধূলি-ধূসর মলিনতায় ঢাকা অঙ্গনে-যেখানে প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতা, মরুভূমির রুক্ষ বাতাসের হাহাকার তার জীবনে 'নোনা স্রোত' বয়ে আনে। জগৎ সংসারে সবকিছু উজাড় করে দিলেও তার হৃদয়ে রয়েছে চরম এক শূন্যতার ছায়াপাত। তবুও তার অন্তঃকোণে রয়েছে অপরিমেয় এক ইচ্ছা শক্তি। 

         তাই 'নোনা স্রোত' শুধু কোনো গল্প গ্রন্থ নয়, এটি একটি প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকা হালভাঙা, পালছেঁড়া, মাস্তুলহারা ও দিকভ্রান্ত এক জাহাজের নাবিকের জীবন কথা। ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটিকা, রম্যরচনা, ভৌতিক গল্প, চিঠি, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা-আরও কত নানা স্বাদের 'নোনা স্রোত'।

 

নোনা স্রোত- একটি সুন্দর গল্প বই lএই বইয়ে ভিন্নধর্মী গল্প স্থান পেয়েছে l গল্প মানুষের মনের দর্পন l গল্প মানুষের মনের কথা বলে l মানুষ এই জগৎ সংসারে জীবন যুদ্ধেরত l গল্প মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায় l জীবন মুখী গল্প মানুষ কে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে l ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটিকা, রম্যরচনা, ভৌতিক গল্প, চিঠি, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা-আরও কত নানা স্বাদের 'নোনা স্রোত'।

এই বই এর সমস্ত গল্প সুন্দর জীবন মুখী l গল্প গুলি পাঠকের মনকে সমৃদ্ধ করবে এবং জীবন এর পথ চলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l পাঠক আনন্দ লাভ করবেন l এই বইয়ের গল্প গুলির অর্থ পাঠক কে নুতুন করে জীবন উপলব্ধি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l

নোনা স্রোত - গল্প বইটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত l কবিকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা l আশাকরি, গল্প বইটি পাঠকের মন জয় করতে পারবে l

LanguageBengali
Release dateAug 9, 2022
ISBN9798201338640
নোনা স্রোত
Author

International Publishing Centre

            Moumita Bahubalindra spent her childhood at historical place Moyna Garh. She had born in Kolkata. Her Educational qualification are. M.Sc, D.EL.ED., PhD . She has complited Diploma course in Computer from Webel and also complited the " Bachik Sudhakar" Degree in  Recitation. Her subject is anthropology. She is a Teacher, Poet and Journalist. She has written Poems, News, views in the different magazines and Newspapers.  She was Associated  with "Kalantar", " Jago Bangla", "Biswa Bangla", "Ekdin" etc newspapers. She has attended the program of F.M and "Ananya" program of D.D.-7. She has recited poems at 'Sishir Moncho', 'Nandan', "West Bengal Banbla Acadamy", 'MadhuSudan Moncho', 'InduMati Hall' of Jadavpur Univercity. She has published two Books namely " Samuderer Nil Swapna" "ChandraDhanaya". She was awarded with 'Vivekjoyti Samman' from Channel Vision, Sera Samman -2018 from All India Legal Forum of New Delhi, Kisore Kumar Award from Kolkata.    She has got a certificate from Asiatic Society regarding 'Manuscript Reading' and associated with many Social works.  She has own Magazine "The Tadanta News".She has working Experience from West Bengal State Health Projects. 

Read more from International Publishing Centre

Related authors

Related to নোনা স্রোত

Reviews for নোনা স্রোত

Rating: 0 out of 5 stars
0 ratings

0 ratings0 reviews

What did you think?

Tap to rate

Review must be at least 10 words

    Book preview

    নোনা স্রোত - International Publishing Centre

    তাপস বিশ্বাস (শূন্য হৃদয়)

    সম্পাদক

    ইউনুস মোল্লা

    ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার

    20 /2B , কামাক স্ট্রিট,প্রথম তলা, ,কলিকাতা-700016

    47F /1 ,যাদবপুর সেন্ট্রাল রোড,কলিকাতা-700032

    Mail :ipcworld100@gmail.com

    প্রথম প্রকাশ

    কলিকাতা বইমেলা-2022

    কপিরাইট: ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার 

    সূচীপত্র

    মুখবন্ধ     5

    উৎসর্গ     6

    প্রকাশকের কথা    7

    নোনা স্রোত (কবিতা)        8

    ১। অনিমেষ দৃষ্টি   9 

    ২। অমূল্য সম্পদ   17 

    ৩। অর্শের বায়ু (রম্যরচনা)     19

    ৪।  আত্মপ্রকাশ          21

    ৫। আতঙ্কের কালো ছাপ (প্রবন্ধ)    36

    ৬। একটু ফিরে দেখা  38

    ৭। একপৃথিবী মেয়ে  42

    ৮। করোনা কৃপা  45

    ৯। কৃষ্ণডালে কুনোব্যাঙ  47

    ১০।গুপ্ত এক নাটক    51 

    ১১। কোনও লজ্জা নেই  53 

    ১২। গোরু     56

    ১৩। ছোটলোক    62

    ১৪। জীবনটাই নদী  71

    ১৫। জীবন্মৃত  75

    ১৬। ধূপবাণে ঝাড়ফুঁক     78

    ১৭। দুর্ভাগ্য    81

    ১৮। নাতবৌয়ের ইতিকথা    85

    ১৯। নিয়তির সাথে       98

    ২০। পরিষেবক     105

    সূচীপত্র

    ২১। পাত্তা  108

    ২২। প্রশ্ন  113

    ২৩। বইয়ে অনীহা (প্রবন্ধ)  117

    ২৪। বঙ্গ লক্ষ্মী  121

    ২৫। বিজ্ঞাপিত করোনা (প্রবন্ধ)  123

    ২৬। বিপরীতমুখী ধর্ম (নাটিকা)  129

    ২৭। ভক্তিরসে মুক্তি―     134

    ২৮। ভাষায় অনুপ্রবেশ (প্রবন্ধ)  136

    ২৯। ভেজালের মধ্যেও নির্ভেজাল (প্রবন্ধ)  138

    ৩০। মর্ত্যের চিঠি (চিঠি)  140

    ৩১। মাতৃশক্তি  142

    ৩২। ম্লান  144

    ৩৩। রাঙামাটির দেশে (ভ্রমণ কাহিনী)  147

    ৩৪। লাইটম্যান (ভৌতিক গল্প)  157

    ৩৫। লাল পলাশের পথে  160

    ৩৬। শতাব্দীর সেরা-করোনা  162

    ৩৭। শতাব্দীর সেরা-হাঁক  170

    ৩৮। সিংহমামা ও ইঁদুর শাবক   171   

    ৩৯। শেষ চিহ্ন    173   

    ৪০। ঐক্যের বন্ধনে ভারত (প্রবন্ধ)  175

    লেখক পরিচিতি  190

    মুখবন্ধ

    একবিংশ শতকের বাংলার মাটিতে যে সকল বঙ্গ সন্তান একাগ্ৰ চিত্তে বাংলা ভাষায় সারস্বত চর্চাকে ব্রত রূপে গ্রহণ করেছেন অথবা বাঙালিয়ানার ক্যানভাসে মননশীলতা ও একাগ্রতার ডিঙিতে ভেসে সৃষ্টিশীলতায় মগ্ন হয়েছেন, সেইসব জ্ঞান পিপাসুদের মধ্যে অন্যতম হল তরুণ সাহিত্যিক 'তাপস বিশ্বাস'। চটকদার অপসংস্কৃতি ও চটুল সাহিত্য সৃষ্টির মখমলে ঢাকা রাজপ্রাসাদে বসে নয়, তার সাহিত্য সৃষ্টি কাঁচের বালুচরে, ধূলি-ধূসর মলিনতায় ঢাকা অঙ্গনে-যেখানে প্রতিনিয়ত প্রতিকূলতা, মরুভূমির রুক্ষ বাতাসের হাহাকার তার জীবনে 'নোনা স্রোত' বয়ে আনে। জগৎ সংসারে সবকিছু উজাড় করে দিলেও তার হৃদয়ে রয়েছে চরম এক শূন্যতার ছায়াপাত। তবুও তার অন্তঃকোণে রয়েছে অপরিমেয় এক ইচ্ছা শক্তি। 

    তাই 'নোনা স্রোত' শুধু কোনো গল্প গ্রন্থ নয়, এটি একটি প্রতিকূল আবহাওয়ায় টিকে থাকা হালভাঙা, পালছেঁড়া, মাস্তুলহারা ও দিকভ্রান্ত এক জাহাজের নাবিকের জীবন কথা। ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটিকা, রম্যরচনা, ভৌতিক গল্প, চিঠি, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা-আরও কত নানা স্বাদের 'নোনা স্রোত'। তার এই সাহিত্য সৃষ্টি পাঠককূলকে মুগ্ধ করবে এই আশা রাখি। 

    আশীর্বাদক-   সুশীল বল্লভ - বাংলা ভাষা-সাহিত্যের শিক্ষক

    রাজগ্রাম হাইস্কুল (উঃমাঃ) , উত্তর দিনাজপুর, উত্তরবঙ্গ।

    উৎসর্গ

    সুমিত্রা মুখার্জী

    প্রকাশকের কথা

    নোনা স্রোত- একটি সুন্দর গল্প বই lএই বইয়ে ভিন্নধর্মী গল্প স্থান পেয়েছে l গল্প মানুষের মনের দর্পন l গল্প মানুষের মনের কথা বলে l মানুষ এই জগৎ সংসারে জীবন যুদ্ধেরত l গল্প মানুষকে অনুপ্রেরণা যোগায় l জীবন মুখী গল্প মানুষ কে তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে l ছোটগল্প, প্রবন্ধ, নাটিকা, রম্যরচনা, ভৌতিক গল্প, চিঠি, ভ্রমণ কাহিনী, কবিতা-আরও কত নানা স্বাদের 'নোনা স্রোত'।

    এই বই এর সমস্ত গল্প সুন্দর জীবন মুখী l গল্প গুলি পাঠকের মনকে সমৃদ্ধ করবে এবং জীবন এর পথ চলতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l পাঠক আনন্দ লাভ করবেন l এই বইয়ের গল্প গুলির অর্থ পাঠক কে নুতুন করে জীবন উপলব্ধি করতে অনুপ্রেরণা যোগাবে l

    নোনা স্রোত - গল্প বইটি পাঠকের হাতে তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত l কবিকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা l আশাকরি, গল্প বইটি পাঠকের মন জয় করতে পারবে l

    শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা সহ 

    Description: C:\Users\user\Desktop\unus.jpg

    ইউনুস মোল্লা - ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশিং সেন্টার   

    নোনা স্রোত

    গভীর সমুদ্র হতে ধেয়ে আসছে শুধু নোনা এক স্রোত

    যতদূর পারে বয়ে নিয়ে যাচ্ছে নদী উপকূলে,

    যার সাথে বইছে সামুদ্রিক ঝড়ো এক নোনা হাওয়া

    জীবনের যত নদীনালা, খালবিল, অলিগলি, ডোবাখানা

    ভরে গেছে বিষাক্ত সব নোনাজলে!

    ––––––––

    সাধুজলে সবেমাত্র মাথা তুলেছিল গুল্ম জাতীয় নতুন যে উদ্ভিদ

    হঠাৎ দমকা হাওয়ায় নোনাজল এসে তারে নিশ্চিহ্ন করে দিল!

    নদীচরে এখন ম্যানগ্রোভ জাতীয় লবনাক্ত উদ্ভিদ

    যার শরীরে বইছে শুধু নোনা পোড়া কালো এক বাতাস

    নোনা পোড়া কালো এক বিষাক্ত স্রোত!

    30–10―2021

    অনিমেষ দৃষ্টি

    মানুষের সফলতার পিছনে বুদ্ধি (IQ) যত না প্রয়োজন, তার থেকে অধিক প্রয়োজন 'আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা' (EQ)। মনোবিজ্ঞানী গবেষকদের দীর্ঘ গবেষণার ফলপ্রসূ অনুযায়ী বলা যায়― মানুষের সফলতার পিছনে বুদ্ধি (IQ) যদি ২০% প্রয়োজন, তাহলে আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন ৮০%। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে―যেসব মানুষের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা কম, তাদের মধ্যে নির্যাতনের হার অনেক বেশি। অন্যদিকে যেসব মানুষের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা বেশী, তাদের মধ্যে নির্যাতনের হার খুব কম।

    সুতরাং মানুষের 'আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা' হচ্ছে এমন এক অদম্যশক্তি, যে শক্তির মাধ্যমে মানুষ তার নিজের ও চারপাশের মানুষের আবেগকে সহজেই অনুধাবন করতে পারেন। প্রয়োজন অনুযায়ী নিজের ও অন্যের কল্যাণে নেতিবাচক প্রভাবকে দূরিভূত করে ইতিবাচক প্রভাবের দিকে অগ্রসর হতে পারেন। যে প্রভাব শুধু নিজের নয়, নিজের ও সমাজের মানুষের কল্যাণে প্রভূত উন্নতিসাধন করতে পারে। একটি বাস্তব ট্রাজেডি কাহিনীর মাধ্যমে অতি সহজেই পাঠক বিষয়টি অনুধাবন করতে পারবেন।

    আমরা জানি, ত্রিকোণ প্রেম কখনো কারো জীবনে সুখকর বয়ে আনেনি। তবুও সেই বাস্তব প্রেমের অমর এক প্রেমকাহিনী―

    রঞ্জন স্থির, ভাবগম্ভীর, চিরদিন সে কবিতাপ্রেমী। আবেগীয় মন কখনো সখনো ডুব দেয় কবিতার ভুবনে। যে মন কিনা মনের অজান্তে ডুব দিয়েছিলো অঞ্জনার প্রেম ভুবনে। যে অঞ্জনা সহজ-সরল মেধাবিনী এক বিদুষী! যে কিনা মনের অজান্তে মন দিয়েছিল চঞ্চল-অস্থির-বাগ্মী অঞ্জনের মন গহীনে। যে অঞ্জন ছিল রঞ্জনেরই অন্তরঙ্গ বন্ধু। যে বন্ধু চেয়েছিল, রঞ্জন সর্বক্ষণ তাদের আশেপাশে থেকে উন্নতিসাধন ও মঙ্গল কামনা করে। রঞ্জন চিরদিন পরোপকারী; ত্যাগে তার অসীম ধর্ম। শরীরস্থ ষড়রিপু―কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ ও মাৎসর্য তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। মনের বিনিময় মন পেতে হবে, দানের বিনিময় দান পেতে হবে, একথা সে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেনি কোনদিন। সে সর্বদাই চেয়েছিলো দু'জনার আশেপাশে চিরদিন থাকতে, দু'জনার প্রেমকে অমর প্রেমে পরিণত করতে। কিন্তু, দিন যতই এগিয়ে আসতে লাগলো, মানুষিকভাবে নানাদিক হতে নানাভাবে উৎপীড়নে উৎপীড়িত হতে হলো! এমন একটা সময় উপস্থিত হলো, নীরবে নিঃশব্দে নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া ছাড়া আর কোনো পথ রইলো না।

    আবেগীয় মন, আবেগীয় তাড়নায় ডুব দিলো কবিতার ভুবনে। প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার সমন্বয়ে সৃষ্টি হলো বাস্তবোচিত সব কবিতা! একদিন সেই কবিতাও খুঁজে পেলো সাহিত্যের আঙিনা। যা ভালো মনে নিতে পারেনি অঞ্জন আর অঞ্জনা। কি করে নেবে! তাঁদের কথাই তো ফুল হয়ে ফুটেছে কাব্যকাননের প্রতিটা শাখা-প্রশাখায়; প্রতিটা ফুলে-ফলে! কিন্তু, তাঁরা আদৌ কোনদিন ভাবতে পারেনি, কাব্যকাননের ফুল হওয়া কতটা সৌভাগ্যের, কতটা পুণ্যের! এই পুণ্য সভার ভাগ্যে জোটে না, যাঁদের ভাগ্যে জোটে তাঁরাই একমাত্র সৌভাগ্যবান, সৌভাগ্যবতী! কারণ, কাব্য কানন যে স্বয়ং বিদ্যাদেবী সরস্বতীর! যিনি কিনা সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার আদেশে স্বর্গ-মর্ত্য-পাতাল খুঁজে ধরাধামে বাল্মীকির মুখে তুলেছিলেন কাব্যকলার প্রথম সৌন্দর্য! সেই হতে কাব্য সৌন্দর্যের ধারা; আজও খরস্রোতা তটিনীর মতো প্রবাহিতা!

    কবিতা হল―

    মানুষের অন্তঃহতে সৃষ্টি হওয়া

    স্বাধীনতম এক সত্তা

    যেখানে নেই কারো কোনো অধিকার।

    কবিতার বিষয় হবে কী

    কবি তা নিজেই জানে না,

    ঐশ্বরিক শক্তি আছে যার শিরে

    তাঁরই তীরকলমের ঝর্ণায়

    কবিতা ঝরে পড়ে।

    নিঃস্বার্থ কবির, কবিতা দানে

    স্বার্থ মনে করে কেউ যদি তা

    ফিরিয়ে দেয় প্রত্যাঘাতে,

    সে কবির ভীষণ লজ্জা

    বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই শ্রেয়!

    কবিদের কখনো কিছু ফিরে পেতে নেই

    যে কবি বিনিময় কিছু ফিরে পেতে চায়

    সেই কবির কবিতা চিরতরে হারিয়ে যায়,

    এখানেই কবিতা শাশ্বত।

    সৃষ্টির উল্লাসে উল্লসিত না হয়ে-সৃষ্টির বেদনায় বেদনাহত হয়ে রঞ্জন এবার অঞ্জন ও অঞ্জনার ভুবন হতে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিতে চাইলো। দূরে সরিয়ে নিতে চাইলে কি আর দূরে সরিয়ে নেওয়া যায়! যতবার দূরে সরে যায়, ততবার দু'জনে সম্মুখে এসে দাঁড়ায়! এমনি করে হঠাৎ একদিন রঞ্জনের মোবাইলে অঞ্জনার নাম্বার ভেসে উঠলো! কয়েকবার রিং হয়ে কেটে যাবার পর; কোনো এক অজানা বিপদের আশঙ্কায় রঞ্জন এবার ফোনটা রিসিভ করলো। রিসিভ করা মাত্রই অনুরোধের সুরে; কান্নাভেজা গলায় অঞ্জনা বললে―    রঞ্জনদা, দেখনা অঞ্জন সন্দেহবশে আমাকে কিসব আবোল-তাবোল বলছে! কিসব পাগলামি করতে চাইছে। নিজেকে নিঃশেষ করতে চাইছে...!

    অগত্যা সবকাজ ফেলে রঞ্জন ছুটল অঞ্জনের উদ্দেশে। যেতে-যেতে রঞ্জন ভাবলো, এভাবে আর কিছুদিন চলতে থাকলে বড়ো কোনো বিপদ ঘটে যাবার সম্ভাবনা অধিক। রঞ্জন তাই অঞ্জনের অভিভাবকদের নিকট বিষয়টি উত্থাপন করল এবং কিভাবে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসা যায়; সে পথ খুঁজার চেষ্টা করলো। কিন্তু, রঞ্জন কিছুতেই সে পথ খুঁজে পেলো না। অঞ্জন বড্ড একগুঁয়েমি, কারো কোনো কথা শোনে না, কারো কোনো বাধা মানে না। নিজেই নিজের মরজিমতো চলে, তার কোনো ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকেরা কেউ হস্তক্ষেপ করতে চান না। আশার সব পথ হারিয়ে নিরাশায় রঞ্জন এবার নিজের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তার কথা অঞ্জনাকে ফোনে জানালো। অঞ্জনা রঞ্জনের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তায় সাড়া না দিয়ে নানা রকমের যুক্তি সম্মুখে এনে দাঁড় করিয়ে দিলো। অবশেষে অঞ্জনের সমস্ত অভিযোগ শুনে; সান্ত্বনা বাক্যে সময়ের হাতে শপে; রঞ্জন ফিরে এলো ঘরে। ঘরে ফিরেও রঞ্জন সারারাত ঘুমাতে পারেনি। কি করে ঘুমাবে; ফোনে অঞ্জনার করুণ আর্তি―

    অঞ্জন আমায় খুন করতে আসছে! সেই সহকর্মী নিরিহ লোকটিকেও খুন করতে চাইছে...!

    আবারও কিছু পরে করুণ আর্তি–                       

    অঞ্জন ভিডিও কলে গলায় দড়ি দিচ্ছে ! তুমি ওকে বাঁচাও...!

    রঞ্জন, অঞ্জনের ঘনিষ্ঠ মহলে ফোন করে তাদের মাধ্যমে অঞ্জনকে সারারাত নজরে রাখার ব্যবস্থা করলো। প্রভাতে রক্তিম আভায় নতুন সূর্য উদিত হওয়ার আগেই, অঞ্জনা রঞ্জনকে ফোন করে বললে―

    রঞ্জনদা, আমি চললাম অঞ্জনের নিকট, নইলে এ সমস্যা কিছুতেই আর মেটবার নয়।

    এমন কথা তো রঞ্জন গতকাল বলেছিলো অবেগীয় বুদ্ধিমত্তায়, এতো নতুন কোনো কথা নয়!

    রঞ্জন তো দেবতা নয়, সেও তো রক্তমাংসের গড়া এক অতি সাধারণ মানুষ। তারও তো চাওয়া-পাওয়া, আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রেম-ভালোবাসা, দুঃখ-বেদনা থাকতেই পারে! সেই চিরন্তন সত্তাকে অন্তঃগহীনে চেপে রঞ্জন এবার ডুব দিলো কবিতার ভুবনে! কবিতাও তাকে আঁকড়ে ধরে প্রেম দিলো অনন্ত! যে প্রেম ফুল হয়ে ফুটলো কাব্য কাননের প্রতিটি শাখাপ্রশাখায়–

    যে বাজিয়েছিলো কাব্যের বীণা

    যে তুলেছিলো কবিতায় সংগীতের সুর

    যে ছিল কবিতার প্রণোদনা,

    যে মুখের প্রতিটি শব্দই ছিলো কবিতা

    বিনাদোষে সে মম ছেড়ে গেছে

    দূর, অতি সে দূর!

    নিভে গেছে জীবনের দীপ

    ঠিকানা বিহীন জীবনের পথ

    কবিতা আর ঝরে না কলমে

    নিঃস্ব, একেবারেই নিঃস্ব!

    রঞ্জন কাব্য কাননে কবিতার ভুবনে মগ্ন হলো। এমনি করে কখন যে দিন গড়িয়ে মাস, মাস পেরিয়ে বছর এলো, রঞ্জন তার কিছুই জানলো না! প্রখর গ্রীষ্মের কোনো এক দিবসের শেষ গোধূলি আলোয়, রঞ্জনের সেই প্রেম ভুবনে দমকা হাওয়ায় মতো গ্রীষ্মের কালোমেঘ ঢুকে পড়লো! অঞ্জনার চোখেমুখে ঝড়ো হাওয়ার ছাপ! অঞ্জন অগ্নিস্ফুলিঙ্গের মতো ঝলসে উঠে নানারকম প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করলো রঞ্জনকে...! রঞ্জন সান্ত্বনা বাক্যে অঞ্জনকে নিরত করার আপ্রাণ চেষ্টা করলো, কিন্তু অঞ্জন রঞ্জনের কোন কথাই শুনতে চাইলো না। ভাষা জগতের যতরকমের অশ্লীল শব্দ আছে ! বাক্য জগতের যতরকমের নিকৃত্তর বাক্যে আছে! সেইসব শব্দ ও বাক্যবাণে রঞ্জনকে রক্তাক্ত করে তুললো! রঞ্জন সমাজের বুকে যথেষ্ট ক্ষমতাবান, যথেষ্ট প্রতিভাবান হওয়া সত্ত্বেও অঞ্জকে কোনোরকম কাঁটায় বিদ্ধ করেনি, কোনরকম অশ্লীল বাক্যবাণে আহত করেনি। কারণ, অঞ্জনা রঞ্জনকে দিয়ে প্রতিশ্রুতি করে নিয়েছিল―"জীবনের কোনো অবস্থাতেই সে যেন রঞ্জনকে শারীরিক ভাবে আঘাত না করে! রঞ্জন শুধু দেখতে চাইলো, মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে, কতটা নীচেয় নামতে পারে! যে রঞ্জন, অঞ্জনকে রাতের পর রাত আশ্রয় দিলো, যে রঞ্জন রাতের পর রাত দুর্যোগে ছুটে গিয়ে অঞ্জনকে চিকিৎসার পরিসেবা দিলো, যে রঞ্জন আপদে-বিপদে যার সর্বক্ষণ সঙ্গী হলো, যে রঞ্জন প্রাণ উজাড় করে অকাতরে ভালোবাসলো, সেই অঞ্জনের এ কোন রুদ্রমূর্তি! রঞ্জন সময়ের হাতে শপে দিলো বিচার। রঞ্জনের অন্তেঃ আছে অনন্ত প্রেম, যে

    Enjoying the preview?
    Page 1 of 1