Discover millions of ebooks, audiobooks, and so much more with a free trial

Only $11.99/month after trial. Cancel anytime.

Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)
Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)
Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)
Ebook318 pages2 hours

Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)

Rating: 4 out of 5 stars

4/5

()

Read preview

About this ebook

গোপাল ভাঁড়ের গল্প চিরনবীন। সমস্যা জর্জর বাঙালি-জীবনে কর্মব্যস্ততার সঙ্গে সময়ের অভাব যতই থাকুক রঙ্গরসিকতা থাকবেই। আর গোপাল ভাঁড়ও তাই থাকবেন হাসির রাজা হয়ে। উদয় ভট্টাচার্য সম্পাদিত এবং সংকলিত হাসির রাজা গোপাল ভাঁড় বইটি মোট ১২৭টি গল্পের এক অনবদ্য সংকলন।

LanguageBengali
Release dateMar 21, 2015
ISBN9781311285522
Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)

Read more from Uday Bhattacharyya

Related to Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)

Related categories

Reviews for Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়)

Rating: 4 out of 5 stars
4/5

1 rating0 reviews

What did you think?

Tap to rate

Review must be at least 10 words

    Book preview

    Hasir Raja Gopal Bhar (হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়) - Uday Bhattacharyya

    হাসির রাজা গোপাল ভাঁড়

    গোপাল ভাঁড়ের গল্প চিরনবীন। সমস্যা জর্জর বাঙালি-জীবনে কর্মব্যস্ততার সঙ্গে সময়ের অভাব যতই থাকুক রঙ্গরসিকতা থাকবেই। আর গোপাল ভাঁড়ও তাই থাকবেন হাসির রাজা হয়ে।

    গোপাল ভাঁড়ের এই গল্পটা আপনারা জানেন। রাজা বললেন, শীতের রাতে কেউ কি সারা রাত এই পুকুরে গলাজলে ডুবে থাকতে পারবে? যদি কেউ পারে, আমি তাকে অনেক টাকাপয়সা, ধনরত্ন পুরস্কার দেব।

    এক ছিল গরিব দুঃখী মানুষ। সে বলল, আমি পারব।

    সে মাঘ মাসের তীব্র শীতে সারা রাত পুকুরের জলেতে গলা ডুবিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ভোরের বেলা সে উঠল জল থেকে।

    রাজার কাছে গিয়ে সে বলল, আমি সারা রাত পুকুরের জলে ছিলাম। আপনার সান্ত্রী-সেপাই সাক্ষী। এবার আমার পুরস্কার দিন।

    রাজা বললেন, সেকি, তুমি কেমন করে এটা পারলে!

    গরিব লোকটা বলল, আমি জলে সারা রাত দাঁড়িয়ে রইলাম। দূরে, অনেক দূরে এক গৃহস্থবাড়িতে আলো জ্বলছে। আমি সেই দিকে তাকিয়ে রইলাম। সারা রাত কেটে গেল।

    মন্ত্রী বলল, পাওয়া গেছে। এই যে দূরের প্রদীপের আলোর দিকে ও তাকিয়ে ছিল, ওই প্রদীপ থেকে তাপ এসে তার গায়ে লেগেছে। তাই তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে এই শীতেও ওই পুকুরে গলা পর্যন্ত ডুবিয়ে রেখে দাঁড়িয়ে থাকা।

    রাজা বললেন, তাই তো! তাহলে তো তুমি আর পুরস্কার পাও না। যাও। বিদায় হও।

    গরিব লোকটা কাঁদতে কাঁদতে বিদায় নিল। সে গেল গোপাল ভাঁড়ের কাছে। অনুযোগ জানাল তাঁর কাছে। সব শুনলেন গোপাল ভাঁড়।

    তারপর গোপাল ভাঁড় বললেন, ঠিক আছে, তুমি ন্যায়বিচার পাবে।

    গোপাল ভাঁড় নিমন্ত্রণ করলেন রাজাকে। দুপুরে খাওয়াবেন। রাজা এলেন গোপাল ভাঁড়ের বাড়ি। গোপাল ভাঁড় বললেন, আসুন আসুন। আর সামান্যই আছে রান্নার বাকি। কী রাঁধছি দেখবেন, চলেন।

    গোপাল ভাঁড় রাজাকে নিয়ে গেলেন বাড়ির পেছনে। সেখানে একটা তালগাছের ওপর একটা হাঁড়ি বাঁধা আর নিচে একটা কুপিবাতি জ্বালানো।

    গোপাল ভাঁড় বললেন, ওই যে হাঁড়ি, ওটাতে জল, চাল, ডাল, নুন সব দেওয়া আছে। এই তো খিচুড়ি হয়ে এল বলে। শিগগিরই আপনাদের গরম গরম খিচুড়ি খাওয়াচ্ছি।

    রাজা বললেন, তোমার বাড়িতে নিমন্ত্রণ খাব বলে সকাল থেকে তেমন কিছু খাইনি। খিদেয় পেট চোঁ চোঁ করছে। এখন এই রসিকতা ভালো লাগে!

    রসিকতা কেন, রান্না হয়ে এল বলে।

    রাজা বললেন, তোমার ওই খিচুড়ি জীবনেও হবে না, আমার আর খাওয়াও হবে না। চলো মন্ত্রী, ফিরে যাই।

    গোপাল বললেন, মহারাজ, কেন খিচুড়ি হবে না। দূরে গৃহস্থবাড়িতে জ্বালানো প্রদীপের আলো যদি পুকুরের জলে ডুবে থাকা গরিব প্রজার গায়ে তাপ দিতে পারে, এই প্রদীপ তো হাঁড়ির অনেক কাছে। নিশ্চয়ই খিচুড়ি হবে।

    রাজা তার ভুল বুঝতে পারলেন। বললেন, আচ্ছা পাঠিয়ে দিয়ো তোমার ওই গরিব প্রজাকে। ওর প্রতি আসলেই অন্যায় করা হয়েছে। ওকে ডাবল পুরস্কার দেব।

    সে তো আপনি দেবেনই। আমি জানতাম। আসুন, ঘরে আসুন। দুপুরের খাওয়া প্রস্তুত।

    তারপর রাজা সত্যি সত্যি গরিব লোকটাকে অনেক পুরস্কার দিয়েছিলেন।

    সবচেয়ে বড় ফারসী শব্দ

    মৌলভী সাহেব একদিন মক্তবে ফারসী পড়াতে পড়াতে প্রশ্ন করলেন, আরবী ফারসীতে সবচেয়ে বড় শব্দ কি, যে যা জান, তোমরা ভেবে চিন্তে সব বল। বারো চোদ্দ অক্ষরের এক একটা শব্দ ছেলেরা অভিধান থেকে টেনে টেনে বার করতে লাগলো।

    মৌলভী সাহেব টুপি নাড়াতে নাড়াতে একবার এধার একবার ওধার ঘাড় দুলিয়ে বললেন, না না এর চাইতেও বড় শব্দ আছে তোমরা ভেবে বল।

    তখনকার দিনে ফারসী জানা থাকলে দরবোরের কাজে সুবিধা হত। এজন্য কাজের আশায় গোপাল সেখানে পড়ত। এবার অনেক ভেবেচিন্তে সে বললে, যত বড় শব্দই থাক, সবচেয়ে বড় শব্দ হল ইসমাইল। ঠিক বলছি কিনা দেখুন।

    মৌলভীর চোখ তখন কপালে। তিনি অবাক হয়ে বললেন, কিসে এটা বড় শব্দ হলো? গোপাল বললে, দেখছেন না- একটি পুরো মাইল আছে এই শব্দটার ভেতরে? আজ্ঞে এর চেয়ে বড় শব্দ আর কিছুই হতে পারে না মুলুকে। আপনি না বললে তো হবে না।

    ধরে আনতে বেঁধে আনা

    রাজা কৃষ্ণচন্দ্র একবার পেয়াদাকে ডেকে বললেন, ওরে ভজহরি ব্যাপারীকে একবার ডেকে আনবি তো। ভজহরি সরেস গুড়ের কারবার করত। পেয়াদা ব্যাপারীকে একেবারে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাজসভায় হাজির করলে। ভজহরি গোপালকে ধারে মাল দিতে চাইত না, তাই তার ওপর গোপাল চটে ছিল। পেয়াদা তাকে আজ একেবারে রাজসভায় বেঁধে এনেছে বলে গোপাল মনে মনে বেশ খুশিই হল। বলল,- বেশ হয়েছে শালাকে বেধেই এনেছে।

    রাজা কিন্তু পেয়াদার ওপর চটে গিয়ে বললেন, আমি ভজহরিকে ডেকে আনতে বললুম, আর তুই কিনা একেবারে বেধে নিয়ে এলি? তোকে আমি বরখাস্ত করব। তোর বেশ বাড় হয়েছে, কেন তুই বেধে এনেছিস- আগে কৈফিয়ত দে, নয়তো এখনি তোকে বরখাসত করলাম। তোর কিছু বলার থাকে বল।

    পেয়াদা কাঁদতে কাঁদতে বলল, আর করব ‍না হুজুর। এবোরের মত বেয়াদপি মাপ করুন। নাহলে খেতে না পেয়ে মরে যাবো।

    গোপাল পেয়াদা পক্ষ নিয়ে ওকালতি করে মোলায়েম স্বরে বললে, হুজুর একে বরখাস্ত করবেন না- এ হচ্ছে জাত পেয়াদা। পেয়াদারা ধরে ‍আনতে বললে বেধেই আনে – আর এ ডেকে আনতেই বলায় বেধে আনায় প্রকৃত পেয়াদার মতোই কাজ করেছে। যদি জাত পেয়াদা না হত সে কখনই বেঁধে আনত না। কথাটা ঠিক কিনা এবার মহারাজ আপনি বিবেচনা করে দেখুন।

    গোপালের কথায় রাজা হেসে ফেললেন এবং অতি করিৎকর্মা পেয়াদাকে ক্ষমা করে দিলেন সেবারের মত। বললেন, এবারের মত অবশ্য মাপ করলাম, আর যেন কখনও এমন না হয় মনে রাখবি।

    পাওনাদার

    গোপাল একবর বাইরে বেড়াতে গিয়েছিল। সেখানে গিয়েই অসুখে পড়ে গিয়ে বিভ্রাট। সেখানকার লোকজনেরা তখন তাকে একটি হাসপাতালে দিয়ে আসে। বিদেশ বিভুই তাই সেখানে জানা শোনা লোক ছিল না তার। রোজগার পত্র না থাকায় অনেক ধারটার হয়েও গেল সেখানে। সেই হাসপাতালে এক বৃদ্ধা তাঁর ছেলেকে রোজ দেখতে যান। তিনি লক্ষ করেন, সব রোগিকেই কেউ না কেউ দেখতে আসে- খাবার নিয়ে আসে, কিন্তু সামনের একজন রোগীকে কেউ দেখতে আসে না বা কিছু মিষ্টিও তার জন্য আনে না। অনেকদিন বাদে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, বাছা তোমাকে কি কেউ দেখতে আসে না? বাড়ি থেকে কেউ কিছু নিয়েও আসে না দেখছি।

    গোপাল বললে, একটু ‍আগে একজন এসেছিলে। সে পাওনাদার, টাকা পাবে, তার তাগাদা দিতে। আর আমি টেসে গিয়ে তার পাওনা ফেঁসে গেল কিনা চোখে চোখে রেখে খবর নিতে।

    হিসাবী লোক

    গোপাল একবার দূর দেশে বেড়াতে যাবে বহুদিন ভাড়াটে বাড়িতে রয়েছে, একে একে অনেক আসবাবপত্র জমা হয়েছে। সে সব আসবাব সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া অসম্ভব, অথচ বেচে যেতেই ইচ্ছে নেই। হেকে পয়সা পাবে। বেচে গেলে টাকা পয়সা যা পাওয়া যাবে এখন, তাতে ফিরে এলে সে টাকায় তো আর খরিদ করা যাবে না, ভালো ভালো আসবাবপত্র প্রায় সব গোপাল সকলের কাছ থেকে দান হিসাবে পেয়েছে তা তো বেচা উচিত নয়। তাহলে লোক কি বলবে? তাই কি করা যায় এ কথাই বার বার ভাবছে। আবার আসবাবপত্র রেখে যাওয়ার জন্যে ওই ভাড়া বাড়িটা বজায় রাখার কোনো মানে হয় না। কারণ অনেক টাকা ভাড়া গুনতে হবে। ভেবে ভেবে অবশেষে একটা ফন্দী বের করলে। গোপাল একটা বড় বন্ধকী দোকানে আসবাবগুলো নিয়ে গিয়ে বন্ধক দিলে। অনেক টাকা দামের আসবাবগুলো নিয়ে গিয়ে বন্ধক দিলে মাত্র চারশো টাকায়। দোকানদার ওইসব আসবাব রেখে পাঁচ হাজার টাকাও দিতে রাজি ছিল। কিন্তু গোপাল ভাবল টাকার চেয়ে জিনিস রাখারই গরজ তার। যত কম টাকা নেওয়া যায়, সুদ টানতে হবে তত কম। সেজন্য হিসেব করে দেখলে- চারশো টাকার দরুন মাসে তার যে সুদ দিতে হবে, একটা ঘর ভাড়া করে জিনিসগুলো রেখে যেতে তাকে মাসে মাসে অনেক বেশি ভাড়া গুনতে হবে। গোপাল বেশ কিছুদিন পর ফিরে এসে টাকা দিয়ে আবার আসবাবগুলি ছাড়িয়ে নতুন ঘরে উঠল।

    একই কপি

    একদিন একটি বিশাল ধর্মসভায় বক্তৃতা হচ্ছিল সেখানে গোপালও ছিল বক্তৃতা শুনছে। একজন সকালবেলায় যে বক্তৃতা দিলেন, বিকালবেলার অন্য একজনও সেই একই বক্তৃতা দিলেন- একই ভাষা, একই কথা। লোকজন সবাই অবাক। শেষে সকলে শুনে বললে, এরূপ কি কোনদিন হয়?

    গোপাল বলল নিশ্চয়ই বক্তৃতা কিনে এনেছেন। দৈবক্রমে একই বক্তৃতার কপি দুজনে কিনে এনে তাই উগরাতে গিয়ে বামাল শুদ্ধ ধরা পড়েছেন, আর কি। এই শুনে সকলে গোপালের উপস্থিত বুদ্ধির তারিফ করে হাসির রোল তুলে সবাই সভা মাতিয়ে দিল।

    তোমার আমার ব্যাপার

    গোপাল একদিন তার প্রিয় বন্ধু নেপালকে বললে, দেখো ভাই সবই তোমার আমার ব্যাপার।

    নেপাল জিজ্ঞাস করলে, সে আবার কি রকম?

    গোপাল বললে, এই ধরো নেপাল- তোমার বাড়ি আমার বাড়ি, আমার বাড়ি তোমার বাড়ি, তোমার টাকা আমার টাকা, আমার টাকা তোমার টাকা, তোমার জামা আমার জামা, আমার জামা তোমার জামা এই সব আর কি।

    বন্ধুবর অবাক হয়ে গোপালের মুখের দিকে তাকিয়ে রইল এ হেন অন্তরঙ্গতার ছোঁয়া পেয়ে। গোপাল ততক্ষণে ভেল্কি দেখানোর মত নেপালের পকেটে হাত ঢুকিয়ে খাবলা মেরে কিছু পয়সা তুলে নিয়ে বলে, এই যেমন তোমার পকেট আমার পকেট সেই পকেট তোমারই থাকল- তোমার হাত, মানে আমার হাত গেল আর এল।

    নেপালের নয়ন গোল হয় আর বদন ক্রমাগতবিস্ফরিত হতে থাকে।

    ঘোড়া নয়, গাধা দরকার

    গোপালের গ্রামে এক ধোপা বাস করত। সে খুবই বোকা। তার একটা ঘোড়া ছিল। কিন্তু ঘোড়ার দ্বারা কাপড় কেচে বাড়ি বাড়ি দেওয়া যায়না। তার একটা গাধার দরকার। ঘোড়া বিক্রি করে সেই টাকায় গাধা ভাল রকম

    Enjoying the preview?
    Page 1 of 1