মণ্ডল রচনাবলী: (প্রথম খণ্ড )
By NK Mondal
()
About this ebook
About the book:
মণ্ডল রচনাবলি হল একজন প্রখ্যাত ভারতীয় লেখক ও দার্শনিক এন. কে. মণ্ডল রচিত রচনাবলি। উক্ত গ্রন্থে কবিতা, গল্প ও উপন্যাস দিয়ে সাঁজানো হয়েছে। উক্ত রচনাবলি প্রথম খণ্ডের রচনাবলিতে আছে কিশোর সাহিত্য, প্রেম সাহিত্য, প্রাপ্ত সাহিত্য ও ধর্ম সাহিত্য। এন. কে. মণ্ডল স্যার একজন ভারতীয় কবি, লেখক ও দার্শনিক। তিনি মূলত ইবুক লেখক হিসাবেই প্রথম পরিচিতি লাভ করেন। গ্রামে প্রাধান্য না থাকলেও দেশ ও বিদেশের বাইরে পরিচিতি অনেকটা অর্জন করে নিয়েছেন। জীবনে তিনি অনেক কষ্ট ও দু:খের মধ্যে জীবন যাপন করেছেন। এমন কি আস্তিক গনের কাছে হুমকি খেতেও হয়েছে তাঁকে। গ্রন্থটি প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত হল।আশাকরি গ্রন্থটি পাঠক সমাজ পড়ে আনন্দিত হবে। লেখক ও প্রবীর রায় সান্যাল বলেন আমি বইটি পড়ে খুবই আপ্লুত হয়েছি এবং পাঠকগনকে বইটি কিনে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, লেখক এন. কে. মণ্ডল একজন জ্ঞানী ও গুনী ব্যক্তিত্ব ভারতের আকাশে।
Reviews for মণ্ডল রচনাবলী
0 ratings0 reviews
Book preview
মণ্ডল রচনাবলী - NK Mondal
মণ্ডলরচনাবলী (প্রথম খণ্ড )
BY
NK MONDAL
pencil-logo
ISBN 9789355592408
© NK Mondal 2021
Published in India 2021 by Pencil
A brand of
One Point Six Technologies Pvt. Ltd.
123, Building J2, Shram Seva Premises,
Wadala Truck Terminal, Wadala (E)
Mumbai 400037, Maharashtra, INDIA
E connect@thepencilapp.com
W www.thepencilapp.com
All rights reserved worldwide
No part of this publication may be reproduced, stored in or introduced into a retrieval system, or transmitted, in any form, or by any means (electronic, mechanical, photocopying, recording or otherwise), without the prior written permission of the Publisher. Any person who commits an unauthorized act in relation to this publication can be liable to criminal prosecution and civil claims for damages.
DISCLAIMER: This is a work of fiction. Names, characters, places, events and incidents are the products of the author's imagination. The opinions expressed in this book do not seek to reflect the views of the Publisher.
Author biography
এন.কে. মণ্ডল ( সেলিম ) হল একজন ভারতীয় কবি, সাহিত্যিক, হিউম্যানিস্ট, সোশ্যালিস্ট,দার্শনিক ও লেখক। তিনি ২০১৯ সালে সাহিত্য রত্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। ন্যাশনাল সাহিত্য পরিষদীয় প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তিনি মূলত ডিজিটাল লেখক হিসাবেই ভারতবর্ষের আকাশে পরিচিত । তিনি কঠিন পরিশ্রম করে উঠে এসেছেন লেখকতার জীবনে। তিনি ৫ই মে ১৯৯৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া ব্লকের অধিনস্থ প্রতাপপুর গ্রামে এক দরিদ্র মুসলিম পরিবারে। পিতা সাইফুল সেখ ও মাতা মেনুকা বিবি। লেখকের জন্মনাম সেলিম সেখ হলেও পরিচিতি নাম নওয়াজ করিম মণ্ডল বা NK Mondal. লেখক মহাশয় পিতার কৃষি কাজে সময়ে কৃষিকাজ করেন। তাঁর লেখা গ্রন্থগুলি গুগুল বুকস,আমাজন,পেন্সিল,কোবো, বার্নেল এ্যাণ্ড নোবেল ইত্যাদির মতো বড় বড় কোম্পানিগুলি বিক্রয় করে থাকে। লেখকের লেখালেখি পেশা নয় বরং নেশা। তিনি মূলত একজন ভারতীয় ইবুক লেখক।
পেশায় একজন গ্রামীণ চিকিৎসক হলেও ধর্ম দর্শন, নাস্তিকতা,সাহিত্য, ইতিহাস, বিজ্ঞান সহ মানবতা আইন নিয়ে লেখালেখি ও গবেষণা করেন। তিনি প্রথম কবিতার মাধ্যমে পরিচিত হন। প্রথম কবিতা হল প্রতিবাদ
ও প্রথম গল্প হল ভূতের ভেলকি
। প্রথম উপন্যাস ভালোবাসা
।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ভ্রান্ত বিশ্বাস ও গোঁড়ামি, নাস্তিকতা , বর্তমান ধর্ম, ভালোবাসা, ইত্যাদি।
Contents
কবিতা সমগ্র
গল্প সমগ্র
উপন্যাস সমগ্র
উপন্যাস সমগ্র ২
Introduction
মণ্ডল রচনাবলি হল একজন প্রখ্যাত ভারতীয় লেখক ও দার্শনিক এন. কে. মণ্ডল রচিত রচনাবলি। উক্ত গ্রন্থে কবিতা, গল্প ও উপন্যাস দিয়ে সাঁজানো হয়েছে। উক্ত রচনাবলি প্রথম খণ্ডের রচনাবলিতে আছে কিশোর সাহিত্য, প্রেম সাহিত্য, প্রাপ্ত সাহিত্য ও ধর্ম সাহিত্য। এন. কে. মণ্ডল স্যার একজন ভারতীয় কবি, লেখক ও দার্শনিক। তিনি মূলত ইবুক লেখক হিসাবেই প্রথম পরিচিতি লাভ করেন। গ্রামে প্রাধান্য না থাকলেও দেশ ও বিদেশের বাইরে পরিচিতি অনেকটা অর্জন করে নিয়েছেন। জীবনে তিনি অনেক কষ্ট ও দু:খের মধ্যে জীবন যাপন করেছেন। এমন কি আস্তিক গনের কাছে হুমকি খেতেও হয়েছে তাঁকে। গ্রন্থটি প্রথম খণ্ডে প্রকাশিত হল। আশাকরি গ্রন্থটি পাঠক সমাজ পড়ে আনন্দিত হবে।
প্রখ্যাত লেখক ও প্রবীর রায় সান্যাল বলেন আমি বইটি পড়ে খুবই আপ্লুত হয়েছি এবং পাঠকগনকে বইটি কিনে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, লেখক এন. কে. মণ্ডল একজন জ্ঞানী ও গুনী ব্যক্তিত্ব ভারতের আকাশে। তিনি চরিত্র ও আদর্শে এক অন্যতম সুন্দর মনের ব্যক্তিত্ব।
লেখক জানান যে, আমার এই গ্রন্থটি প্রকাশ করার অপেক্ষায় ছিলাম এবং তা মহান সৃষ্টি কর্তার কৃপায় প্রকাশিত হতে চলল। আমার এই পুস্তকটি আমার পিতামাতা, দিদিমা, বড়মা, পাঠকগন, শ্রী প্রবীর রায় সান্যাল, জান মোহাম্মদ, এম. শাহজাহান, ওয়াশিম রাকিব মহাশয়কে উৎসর্গ করলাম।
NK Mondal06-12-21
কবিতা সমগ্র
১. প্রতিবাদ
হয় নাতো প্রতিবাদ আমাদের দেশে।
কেন কি ভয় পাই আমাদের যুব সমাজ।
কবে গড়ে উঠবে আমাদের যুবশক্তি।
বিনাশ হবে পুঁজিবাদ সাম্রাজ্যবাদী।
দেশ হবে রক্ষা, আসবে সু শিক্ষা।
কেন হয় না সজাগ তারা,
বাধা দেয় কারা।
পারবে নাতো আটকাতে আমাদের যুবশক্তি।
আমাদের দেশ হবে বিবাদ হীন মুক্তি।
প্রতিবাদ প্রতিবাদ বিনাশ করব আজকের ফ্যাসিবাদ।
লড়ছি লড়ব আন্দোলন করব।
দেশ কে করব রক্ষা।
তোমাদের চাই না আর ভিক্ষা।
আমরা সবাই সমান।
কাহাকেউ করি না অসন্মান।
সহ্য করব না আমাদের বদনাম।
কোথায় আছে লুকিয়ে আমাদের দেশে।
যুবশক্তি কি নেই আমাদের সমাজে।
তারা কি পারবে না প্রতিবাদ করতে।
তারা কি পারবে না অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়তে।
হে তরুণ সমাজ।
তোমরা হও সজাগ।
কর প্রতিবাদ,
শেষ কর পুঁজিবাদ।
শেষ কর ফ্যাসিবাদ,
কায়েম কর এক শিক্ষিত সভ্য সমাজ।
২. আমার দেশ
ও আমার দেশের মাটি।
আমি তোমায় ভালোবাসি।
ভারত আমার মাতৃ জন্মভূমি।
আমারা এক সমাজে বাস করি হিন্দু - মুসলমান।
আমরা ভারত মাতারই সন্তান।
আমরা করি না মারামারি।
করি না হিংসা, বিবাদ সৃষ্টি।
আমরা এক সমাজে বাস করি।
আমরা ভারত মাতাকেই মানি।
ভারত আমার জজন্মভূমি।
ও আমার দেশের মাটি।
আমি তোমায় ভালোবাসি।
ভারত আমার মাতৃ জন্মভূমি।
আমি তোমায় ভালোবাসি।
ও আমার দেশের মাটি।
৪. কাজ
সকালের ওই দৃস্টি।
শুভ দিনের সৃষ্টি।
করে কতো শত কাজ শ্রমিকেরা।
সমাজের চোখে ফাঁকি দেয় বাকিরা।
করে কতো সমাজ কে কুলুষিত।
প্রতিবাদ করে নাতো কেউ।
কিছু মানুষ করে শুধু ঘেউ ঘেউ।
আর বর্মমানের রাজনীতি।
শুধু করে কেলেঙ্কারি আর দুর্নীতি।
করে না কেহ উন্নয়ন।
শুধু বাড়ায় নিজেদের আয়তন।
৫. আঁধার
সঁন্ধা নেমে আসছে ওই দিক থেকে।
কালো আঁধার ছায়া লাগছে মোর গায়ে।
চাষিরা আর নেই মাঠে।
সবুজ শ্যামলা শস্য গুলি হারিয়ে যায় আঁধারে।
সবার চোখের সামনে দিয়ে।
যায় দিন গুলি রাত হয়ে।
তবুও ভাবি বসে একমনে।
কেনো যায় রাত্রি দিন হয়ে।
কেনো থাকে না এক হয়ে।
কি হয় সমস্যা তাতে।
৬. বৈমানী
ধর্মে ধর্মে সর্বদা লেগে আছে ফ্যাসাদ।
কেন হবে এই দেশে আজ।
ভারত আমার গর্ব।
সংবিধান আমার আমার ধর্ম।
মিলেমিশে থাকা আমার মানবতা।
ভারত আমার জাতীয়তা।
পরিচয় বাঙালি।
করতে জানি সন্মানি।
করলে বৈমানী।
দিতে জানি পিটুনি।
আমরা কিন্তু ভালোইবাসি।
৭. দিনগুলি
আমি বসে বসে ভাবি একমনে।
দিনগুলি আসে যাই কেমনে।
সবার সামনে থেকে যায় হারিয়ে।
তবুও ভাবি বসে হয় কেমনে।
একি স্বপ্ন না বাস্তব দেখি চিমটি কেটে।
আহ: সবতো ঠিকই আছে।
তবুও ভাবি একমনে।
দিনগুলি আসে যাই কেমনে।
৮. পাল্টাচ্ছে
সমাজটা পাল্টাচ্ছে বোঝা যায়।
আমরা ভাবছি কি তাই।
আসলে সমাজটা পাল্টাচ্ছে।
না উন্নয়ন না অবক্ষয়।
বোঝা কি যাচ্ছে কি হচ্ছে।
সমাজের ভিতরে বা বাইরে।
মনে হয় পাল্টাচ্ছে।
শুধু কি এটাই।
মনে মনে ভাবি তাই।
সমাজটা পাল্টাচ্ছে বোঝা যায়।
9. সাজুর চায়ের দোকান
সাজুর ওই চায়ের দোকানে।
বেশ বড় আড্ডা জমেছে।
কেউ করছে হইচই,
কেউ খেলছে তাস।
সাজু পারছে না আটকাতে কাস্টমার।
কেউ বলে চা দাও, কেউ বলে ল্যাঞ্চা দাও।
বেশ বড় গোলমেলে সাজুর ওই দোকানে।
বেশ বড় আড্ডা জমেছে।
দেখছে ছবি টিভির পর্দায় বসে।
সাজুর ওই দোকানে।
বেশ বড় আড্ডা জমেছে,
সাজুর ওই দোকানে।
10. ইচ্ছে করে
তোমায় নিয়ে ইচ্ছা করেরাত্রি জেগে গল্প করতে।
ইচ্ছা জাগে তোমায় নিয়ে প্রেম সাগরে সাঁতার দিতে।
তোমার সুন্দর কোমল হাতের স্পর্শে আমার শরীর শিহরিত হয়।
যেনো ঠিক গরমের আইস্ক্রিমের মতোগলে গলে জল হয়ে যায়।
মিষ্টি মুখের মিষ্টি হাসি দিয়েকরেছো আমায় বশ।
পারি না আর তোমায় নিয়েকি করব আজ।
ভীষণ লাগে লজ্জা যখন কর কিস,
আলতো করেমাথায় মাজায় হাত রেখে।
শুড়শুড়ি লাগে মোরআমার হৃদয়ের দেশে।
11 ও প্রিয়া
ও আমার প্রিয়া,
কেন তুমি করো রাগ।
কেন থাকো চুপ করে,
একলা ঘরের মাঝে।
তোমায় রাগলে বেশ ভালো লাগে,
কিন্তু চুপ করে থাকলে ভালো লাগে না।
ও প্রিয়, কেন তুমি রাগ করো।
তোমায় নিয়ে কত স্বপ্ন দেখি,
আমার হৃদয়ের মাঝে।
কত জমিয়ে রেখেছি,
তোমার জন্য ভালোবাসা।
তুমি আজ কাছে নেই,
বড্ড একা লাগে আমায়।
ভালো লাগে না তোমায় ছাড়া।
কেমনে থাকি,তুমি বোঝ না।
ও প্রিয়া, কেন তুমি করো রাগ।
একটু হাসো আমার দিয়ে চেয়ে।
12. হিংস্র রাজনীতি
দেশ হচ্ছে দিনের পর দিন হিংস্র রাজনীতির প্লভনে পড়ে।
হচ্ছে না কোনো উন্নয়ন খাচ্ছে সব নেতারা বসে।
নায্য ফসলের দাম পাচ্ছে না চাষিবেড়েই চলেছে কোম্পানির পোডাক্টের দাম।কিনতে গেলেই হাজার বার ভাবে মানুষ এত পরিশ্রম করেও চাষি পায় না কোনো নাম।
চাষির ঘরে থাকলে ফসল বাড়ে না কোনো দাম।
ফসল গেলেই বার হয়েতা হয়ে যায় অগ্নি সমান।
কোম্পানিদের মোটা টাকা নিয়েচালাচ্ছে গদি সরকার।
সাধারণ মানুষের কথা মোটেওভাবে না,
কি তাদের দরকার।
প্রজাদের করছে হিংস্র সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে।ভোটে জিতে দাদাগিরিকরছে বসে সংসদে।
পুলিশ প্রশাসন কে করে রেখেছে কাঠের পুতুল।
দেয় না তাদের ঠিক কাজ করতেনা হলে খেতে হবে নানান শুল।
কত পড়ে রয়েছে অসহায় মানুষ সবখোঁজ নেওয়ার নেই তাদের কেউ।
অথচ ভোটের সময় তাদের কাছে নত হয়ে করে ঘেউ ঘেউ।
সত্যবাদী পাই না সঠিক বিচারযদি যাই আদালতে।
এম পির ভয়ে বিচার যায় বদলেসত্যবাদী যাই হাজতে।
পঞ্চায়েত সদস্য থেকে সাংসদ খাচ্ছে সরকারের টাকা।
ভোটের আগে হাজারো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে জনগনের মাঝে।
13. দেশটা
দেশটা যাচ্ছে পাল্টিয়ে মূর্খ নেতাদের জন্য সংসদে বসে আছে কিছু সাংসদ বন্য।
গণতান্ত্রিক দেশে নেইগণতন্ত্র আছে শুধুই দেশে মূর্খ একনায়কতন্ত্র।
রাজার জানা নেই রাজধর্ম করছে দেশে সব ভুলভাল কর্ম।
নেই অর্থনৈতিক,শিক্ষা,শিল্প পরিকাঠামো ভালোমনে হচ্ছে বারবার এই বুঝি দেশ গেলো।
করছে না কেউ প্রতিবাদ আমাদের দেশে করছে যারা
প্রতিবাদ অন্যায়ের বিরুদ্ধেযাচ্ছে তাঁরা লোহার জেলে।
ধর্ম নিয়ে করছে হানাহানিগর্বের দেশে এবার যাবে বুঝি ভারত শেষ হয়ে।
14. অপেক্ষায়
আমি বসে আছি তোমার অপেক্ষায় হলুদ গোলাপ নিয়ে হাতে।
তুমি আসবে বলে নিয়েছি সঙ্গে লাল গোলাপের মালা গেঁথে।
তোমার প্রিয় পছন্দের সাদা প্যান্ট শার্ট পড়ে এসেছি পার্ক সার্কাসের ঘাটে।
তোমার পছন্দের জায়গায় এসেছিসঙ্গে নিয়ে গোলাপি স্কুটি তুমি চড় বলে।
আমি বসে আছি তোমার অপেক্ষায় তুমি আসবে বলে।
বিকেল গড়িয়ে সঁন্ধা হয়েছে তবু্ও আসলে না আমার কাছে।
জানি না তোমার কি হয়েছে পাচ্ছি না মোবাইল যোগাযোগ মাধ্যমে।
তবুও বসে আছি তোমার অপেক্ষায়তুমি আসবে বলে।
15. মাগো আমি তোমায় ভালোবাসি
মাগো আমি তোমায় ভালোবাসি।
আমি তোমার সেই ছোট্ট ছেলেটি।
হারিয়ে যায় নি অশান্তির দেশে।
মাগো তুমি যেমন চেয়েছিলে।
হয়েছি আমি তোমারই মতন।
মাগো তুমি যেমন চেয়েছিলে।
যাব না ঝঞ্জাট বিবাদে,যাব না খারাপ পথে।
মাগো তোমার কথা মেনে চলতে পারি যেনো সারাটি জীবন ধরে।মাগো তুমি যেমন চেয়েছিলে।
মাগো আমি তোমায় ভালোবাসি।
আমি তোমার সেই ছোট্ট ছেলেটি।
তুমি নিষেধ করেছিলে অসৎ পথে চলতে।
তুমি নিষেধ করেছিলে খারাপ না হতে।
মাগো তুমি যেমন চেয়েছিলে।
মাগো তোমার জন্য দেখেছি পৃথিবীর আলো,
দেখেছি পৃথিবীর পরিবেশ।
মাগো তোমার কথাটি সর্বচ্চবাণী।
মাগো আমি তোমায় ভালোবাসি।
মাগো দিয়েছি তোমায় কতো বেদনা,
বুঝতে পারছি অবশেষে।
মাগো তুমি দিয়েছো জন্ম,করেছো কস্টো,দিয়েছো সম্পদ।
তোমাকে হতে হয়েছে অনেক বিপদের সংকট।
তবুও তুমি বলনি কিছু আমায়,করে গেছো আদর যত্ন।
মাগো আমি তোমার সেই ছোট্ট ছেলেটি।
মাগো আমি তোমায় ভালোবাসি।
16. সমাজটা বর্বর
সমাজটা বর্বর হচ্ছে চোখের সামনে,
নেই কোনো প্রতিবাদ।
শিক্ষিত হয়েও অশিক্ষিতর মতো আচরণ করে কিছু ভদ্রলোক।
সমাজটা যাচ্ছে কোথায়,
দেখছে না কেউ খতিয়ে।
সবাই নিজ কাছে ব্যাস্ত,আছে যে পড়ে নেতিয়ে।
চোখের সামনে উপচে পড়ছে,মানুষের নানান নোংরামি।
ভাবে না সে কখনো নিজে কে নিয়ে,ভাবে শুধু নিজের স্বার্থটা।
কমে গেছে সমাজে উপকারিতা,বেড়েছে সুদের ঝঞ্জাট।
যে যত পারছে দিচ্ছে নিচ্ছে,খাচ্ছে চুষে গরীবের রক্ত।
মানুষে মানুষে নেই মন মালিন্য,গেছে সব হাওয়ায় উড়ে।
যাচ্ছে আপনজন পর হয়ে,হচ্ছে না কেউ আপন।
ঠকবাজ আর রাজনীতির গোলক ধাঁধায় পড়ে,যাচ্ছে যে সব মরে।
মিথ্যাবাদী চলছে সব মুড়ি মুড়কির সাঁজে,হচ্ছে না কেউ বিদ্যাসাগর গুণে।
হিংসায় হিংসিত হচ্ছে মোদের সমাজ,নেই
কোনো সদাচার মানুষের কাছে।
জীবন্ত মানুষ জ্বলছে, সবহিংসা ও রাজনীতির ফাঁদে পড়ে।
নেই মায়া মমতা, যদিও হয়ে পড়ে।
পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে চলে, কালো চশমা পরে।
সমাজে একটু ঠাঁই পেতে, করছে কত খুন খারাপি।
বলছে না কোনো কথা করছে না প্রতিবাদ,দাঁড়িয়ে থাকে ল্যাম্পপোস্টের মত নির্বাক।
দরিদ্র ও অসহায় মানুষ দেখলে,
দরজা বঁঁন্ধ করে, আবার কেউ না দেখার ভান করে চলে
17. শেষ চিঠি দিদির প্রতি
আমার দিদি সবার সেরা,নামটি দিদির মুর্শিদা।
কতই না সুন্দর মুখের হাসি।
আমার দিদি ভালো দিদি,
সুন্দর ওই চাঁদ মুখখানা।
তার থেকেও আরো ভালো দিদির সুন্দর মনটা।
বাবা-মা সবাই ভালো, তাঁর থেকেও ভালো ভালোবাসার মনটা।
পরিবারটা নইকো মোটেই বাজে,
তার থেকে আরোও ভালো সুন্দর ব্যবহারটা।
হতভাগ্য আমি চিনতে পারিনি,
করেছি ঘুমের নেশায় বড্ড বড় ভুলটা।
আফসোস পরিবারটাকে হারাবার জন্য,
আরোও বড় আফসোস করি ছোট্ট আব্বুদের না দেখে।
দাদাও বেশ ভালো।
ভালোবাসা আমার বড্ড ভালো,
পারেনি বুঝতে তাঁকে।
হারিয়ে তাঁকে করেছি মিস ভুলবো নাকো জন্মে।
মুখটি তাঁর পড়ে বারবার মনে,
আমার হৃদয়ের মাঝে।
ভুলবো নাকো আদর-যত্ন বাবা-মায়ের,
জানাই তাঁদের শ্রদ্ধা হৃদয় ভরে।
আমি তেমনটা নয় যেমন দেখেছিলে,
মাগো তোমার ছেলে তোমায় বড্ড ভালোবাসে।
দুধে-ভাতে থাকুক পরিবার এই করি প্রার্থনা আল্লাহর কাছে।
মাগো তোমার ছেলে নই কো খারাপ মাতাল বা পাগল।
তোমার ছেলে বাংলা সেরা,
জানে শিক্ষিত লোকে।
স্কুল-কলেজ বড় বড় অনুষ্ঠানে পাই সেরা পুরস্কার,
তার থেকে আরোও বক্তৃতা দেয় বড় বড় শিক্ষার জায়গায়।
মাগো তোমার কাছে চাইছি ক্ষমা বলেছি অনেক কিছু,
ভালো থেকো সবাই মিলে,
আরোও থেকো শান্তিতে।চলিলাম মাগো আমি দেখা হবে পরে।
18.ভগ্ন হৃদয়
আমি তোমাকে বিশ্বাস করেই ভালোবাসি তা কি দিয়ে বোঝাবো জানিনা। বারবার তোমাকে মনে পড়েতুমি কেমন আছো কি করছো।
মনটা বড়ই উতলা হয়ে ওঠেকিন্তু পারিনা সাহস করে একটিবার ফোন দিতে।ফলো করি তোমার হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি,
কখন অনলাইনে আছো।
তুমি আমায় ভালোবাসো আর নাই বা ভালোবাসো।
আমি তোমাকেই ভালবেসে যাবো যতই করো না কেন আমাকে ঘৃণা, তাতে আমার কিছু যায় আসে না।
প্রয়োজন ছিল না কোন কিছুর,
যদি থাকতে আমার পাশে।
লোভ-লালসা কোনোদিনও ছিল না এখনো নেই।
সৎভাবে জীবনযাপন করাই আমার একমাত্র নেশা,
কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস বদলে দিল।
করে দিল আমার হৃদয়কে বিচ্ছিন্ন।
19.বুক ফুলিয়ে বলব
ভালোবাসি ভালোবাসি বুক ফুলিয়ে বলব।
স্বপ্নের ভেলায় তোকে নিয়ে ভাসব।
তুমি আমায় দিয়েছো ছেড়ে।
তাতে ক্ষতি নেইএকটুও বেড়ে।
ভালোবাসি ভালোবাসি বুক ফুলিয়ে বলবো।
আমি বারবার স্বপ্নে তোমাকে নিয়েই বাঁচব।
তুমি আমায় ঘৃণা করো তাতে ক্ষতি নেই।
আমি ভালো আছি মন্দে আছি টিকটিক চলে যাচ্ছে সেই
20. সুন্দর একটি মেয়ে
সুন্দর একটি মেয়ে |
কি দারুণ সুন্দর |
মনে হচ্ছে রুপ নগরের রাজকন্যা হেটে যাচ্ছে আমার পাশ দিয়ে শরীর কে জ্বালাময়ী করে |
হাটতে হাটতে কয়েক বার হাসি দিয়ে জানান দিলো,
সে আমায় ভালোবাসে |
কাজল চোখের চাওনিতে,
বিঁঁধলো আমার বুকে পেমের কাঁটা |
যখন হাটতেছিল হলুদ শাড়ি পরে,মনে হচ্ছিল যে দুর্গা হাটছে,
আমাকে সাগরে টানার জন্য |
কি সুন্দর একটি মেয়ে, আমাকে জড়াতে চাইছে তাঁর বুঁঁকে |
এমন ভাবে তাঁঁকাচ্ছিল আমার দিকে,
যেন কাছে পেলেই গিলে খাবে যৌবন ব্যাঘ্রে |
কি সুন্দর একটি মেয়ে,
বারবার আমায় ডাকছে ইশারায় আমাকে |
21.সময়ের তালে
সময়ের তালে তালে বেঁজে উঠেছে নিষ্ঠুরতার ধ্বনি।
আর নেই মানুষের ভালো চিন্তানেই আর মানবতার বাণী।
সবই গিয়েছে মিলেমিশে শয়তানের সঙ্গে।
নেই কেউ আর সঠিক পথে মনুষত্ব দিয়েছে ভাসিয়ে নদীর জলে।
চলার পথে যাচাই করে নাখারাপ না ভালো কর্ম।
হারাম হালাল না বেছে বেছে হয়েছেআজ শয়তানের কালো বর্ণ।
সত্যবান ব্যাক্তি কে দেয় নামর্যাদা আমাদের সমাজে।
মাতাল মাস্তান ধর্ষক চালায়আজ দেশের শাসন ব্যাবস্থাকে।
গড় গড়িয়ে চলে মূর্খদের ভাষনহাজার শ্রোতার মাঝে।অথচ শিক্ষিত পাই না সন্মান তাদের মত করে।
22. কথাগুলি
সেই বিদ্যালয়ের কথাগুলি মনে আছে তোরকথাগুলি শুনে শুনে আমি হয়েছিলাম বোর।
তুই বলেছিলি সারাজীবন ধরেভালোবাসব তোকেকিন্তু কি হল ফাঁকি দিলিআমাকে শেষে।
বাবা মায়ের কথায় রাজি হয়ে করলি বিয়ে শেষে ঝঞ্জাট,ঝামেলা, অশান্তি তোদের এখনসর্বদা লেগেই থাকে।
কোটিপতি হয়েছিস শ্রমিকের রক্ত চুষে চুষেকরেছিস কিশোরী হয়ে এক বুড়োকে বিয়ে, অর্থের লোভে।
23.কিস
মনে আছে তোমার প্রথম ঘটনাটি খেয়েছিলাম কিস হুড়মুড়িয়ে।
হঠাৎ করে কিস করতে গিয়েপড়ে গেলে চৌকির মাঝে।
জানা ছিল না কিস করার মডেলটাই তো আমাকে কিস করতে গিয়ে করেছিলে ফেল।
ইচ্ছা ছিল তোমার মাজায় মাথায় হাত রেখে কিস করতে,
ভাগ্যে কি হল অবশেষে পেলে এক বুড়োকে ব্যাটা কে।
24. ইসলাম ধ্বংসের মূলে
ইসলাম ধ্বংসের মূলে বর্তমান অধিক আলেম।
করছে কাজ কিছু বর্তমানে আলেম নামে জালেম।
মসজিদে নামাজ পড়তে গেলে ফরাজি হানাফি মতভেদ টানে আনে।
মূর্খ আলেম ক্লাস টু পড়ে জ্ঞান দেয় শিক্ষিতদের মাঝে।
আহা কি করি এখন ওদের ধর্মের জাতা কলে পড়ে।
পারছি না পালাতে ওদের ভুলভাল মতভেদ ছেড়ে।
শেখায় না সঠিক মানুষকে ধর্মের বাণী ধর্ম দিয়ে ব্যাবসা করে বর্তমান কিছু আলেম গুলি।
ইসলাম ধর্ম মানবতার পথ দেখায় সবচেয়ে ভালো,
কিন্তু বর্তমান করছে ইসলাম কে কুলুষিত বা কালো।
অধিক হিংসা পরায়ণ হয়ে গেছে আলেমগুলি।
সমাজ কে করছে হিংসাত্মক আরও আছে অনেক কর্মকাণ্ড।
ভেদাভেদ করে তুলছে ধার্মিকদের মধ্য।
অথচ নিজেকে করছে ইসলামের পণ্ডিত বলে গণ্য।
পণ্ডিত তো সেই ব্যাক্তি যিনি সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসেকরে না কাউকে বিষাক্ত শুধু ভালোবাসেমানবতার বলে।
আমি গিয়েছিলাম নামাজ পড়তে মসজিদে আমাকে নিয়ে কটুক্তি করে আমি ফরাজি বলে।
এটা কি আসলে আলেমের পরিচয় না আলেম সমাজের ভুল ভ্রান্তের জয়।
কবে গড়বে সঠিক ধর্ম বর্তমান সমাজে পেশা যাবে ভাণ্ডামির নামে শেষ হয়ে।
25. আমি তোকেই ভালোবাসি
আমি তোকেই ভালোবাসি,
নেই আগে পিছে কেউ আমার।
ছিল না আমার ভালোবাসা কোনোদিনই।
যদি বা ছিল খনিকের মতো।
তবুও আমি তোকেই ভালোবাসি।
ঠিক বিয়ের মাঝরাতে পরিচয়।
পছন্দ না করলেও করেছ পছন্দ,
ব্যাবহারের কারণে মুগ্ধ হয়ে।
বেসেছো ভালো নয়নের মণি করে,
একটু কোথাও গেলে জল ঝরে চোখের কোণে।
আমি ভালোবেসে যাব তোকে সারাজীবন ধরে,
থাকবে না তাতে বাঁধা কারো।
দুজনের মিল থাকে যদি অন্তরের মাঝখানে,
পারবে কে আটকাতে আমাদের ভালোবাসাকে।
আমি তোকেই ভালোবাসি,
নেই আগে পিছে কেউ।
কিছু মহুর্ত আসে যায় বেদনা দিয়ে,
জীবনকে করে তোলে অতিষ্ট আর জ্বালাময়।
তবুও বাঁধা বিপত্তি যায় পেরিয়ে,
সময়ের মধ্যে থেকে।আমি ভালোবাসব তোকেই সারাজীবন ধরে।
26. ধর্ম বিবাদ
আজ আমাদের দেশে বর্তমান সমাজ ভেঙ্গে পড়ে করছে সর্বদা বিবাদ।
আমরা বর্তমান আধুনিক শিক্ষিত সমাজ সর্বদা লেগে আছে ধর্মে ধর্মে ফ্যাসাদ।
আমরা যদি ধর্মই করি তবে কেন ধর্মের হানাহানি কেনই বা করি ধর্ম নিয়ে মারামারি।
যত বিবাদ হচ্ছে পৃথিবীতে বেশিরভাগ ধর্ম নিয়ে।
ধর্ম বিবাদ ভুলে গিয়ে আমরাচলি মানবতার পথে।
27. বৌদির গোসল
বৌদি তুমি করলে গোসল চেয়ে থাকি আমি।
তোমার শরীর দেখলে মজা আর কি থাকে বাকি।
ও বৌদি নাও না গো আমায় তোমার কাছে টেনে।
দেওরা আমি থাকতে পারি না তোমার গোসল দেখে।
নাও না একটু আদর করে,
ছোট্ট দেওরা বলে।
ইচ্ছা করে বারে বারে তোমার গোসল দেখতে।
বৌদি তোমার যৌবনে নিয়োগো আমায় টেনে।
তোমার জীবন ধন্য করে ভরিয়ে দেব সুখ দিয়ে।
ও বৌদি ভেবো না অতোসতো যাবে সময় পেরিয়ে।
আমি আছি যুবক তোমার মাতব সুখের সাগরে।
28. চাষির অভাব
সকাল হলেই চাষিরা ছোটে মাঠের দিকে তাঁকিয়ে
খেয়ে না খেয়ে কাজ করেবাড়ি ফিরে বিকেলের শেষে।
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে করছে চাষি চাষ।
ব্যাবসায়ীরা করছে ব্যাবসা চাষিকে দিয়ে বাঁশ।
তবু্ও চাষি পায় না নায্য ফসলের দামসার,বীজ,কীটনাশকের মূল্য বেড়ে হয়েছে অগ্নি সমান।
পাই না চাষি সাহায্য কারোঅতি কষ্টে চালায় সংসারচিন্তায় চিন্তায় কাতরে মরেতবুও যায় না চাষির অভাব।
গল্প সমগ্র
জ্যান্ত কবজ
বক্সিগঞ্জের এক পাড়াগাঁয়ে রহিম এবং করিম ছুলছুলি (ডাকনাম) বলিয়া দুইজন বসবাস করিত। উহারা গ্রামের মধ্যে নানান বিবাদে জড়িয়া পড়িত। তাহারা এক প্রকার বদমাইশ ছিল। এমনিতেই বক্সিগঞ্জ সুবিধাজনক ছিল নাই। সারাদিন চুরি চামারি হিংসা বিদ্দেষ উগ্রমেজাজ লেগেই থাকিত। উহারা মুসলমান হওয়ার জন্য উহাদের গাঁয়ের লোকে মান্য করিত। অল্প অল্প সময়ে নামাজ পড়িত। বয়স্ক ছিল মোটামুটি পঞ্চাশ কি বাহান্ন হইবে। তাহারা গ্রামে নানান অপকর্মে জড়িত ছিল। নানান মামলা মোকাদ্দামা। এক সময় বক্সিগঞ্জে ওলাওঠা রোগ হইয়া মৃত্যু হইয়াছিল অনেকের, সে সুজোগে উহারা সিঁধ কাটিয়া চুরি করিয়া কিছু কামাইয়া নিয়াছে। সেসব মালকড়ি ফুরাইতেই উহাদের চিন্তা হইল কিভাবে তাহারা সংসার চালাইবে। রহিম ও করিম দুই বন্ধু মিলিয়া যুক্তি করিল যে, তাহারা বিদেশে যাইবে কাজের সঁন্ধানে। বিদেশে যাইয়া কিছু কামাই করিয়া গৃহের দিকে ফিরিবে, নচেৎ ফিরিবে না। উহারা বৌ বাচ্চা রাখিয়া, একদিন প্রভাত হইবার পূর্বেই বাহির হইয়া যাইল। প্রভাত যখন হইল, তখন রেলস্টেশন পৌঁছাইয়া গিয়াছে। উহারাদের তখন উদর ভোজনের প্রয়োজন পড়িয়া গেল। শহরে কি আর বিনা পয়সায় কেইবা খাইতে দিবে। পোটলাতে কিছু খাবার ও কাজ করিবার যন্ত্রপাতি রহিয়াছে। উক্ত খাবার এখনই খাইয়া লইলে সমস্ত পথে কি খাইবে ভাবিতে লাগিল। করিম ছুলছুলি ভাবিতে ভাবিতে একটা উপায় বাহির করিল। যে উহারা বিনা পয়সায় খাইবে পেট পুরিয়া। করিম যুক্তিটা রহিমের কর্ণমূলে ফিসফিস করিয়া প্রবেশ করিয়া দিল। রহিম করিমের যুক্তিতে রাজি হইয়া একটা শহরের বড় হোটেলে যাইয়া চেয়ারে বসিয়া পড়িল। ভাত মাছ মাংস দই ইত্যাদি অর্ডার করিল। কিছুক্ষণ পরে হোটেলের এক কর্মচারি আসিয়া উহাদের সম্মুখে অর্ডার করা নানান খাবার উপস্থাপন করিয়া চলিয়া গেল। রহিম ও করিম চট জলদি গোগ্রাসে খাইতেছে। ইহা দেখিয়া আশে পাশের ভোজনকারীগণ উহাদের ভোজন পক্রিয়া দেখিতেছে। বারবার ভাত মাছ মাংস ডাল আনিতে আনিতে বিরক্ত হইয়া যাইতেছে হোটেলের কর্মচারীবৃন্দ। অনেকে হা হা করিয়া হাসিতেছে। আবার কেউ রুমাল দিয়া মুখ আবৃত করিয়া হাসিতেছে। ইহা দেখিয়া অনেকের ভোজন উঠিয়া গেল। অনেকে হাত তালি দিতেছে। কেহ সাহস দিতেছে আরো খাইবার জন্য। রহিম ও করিম উহাদের উৎসাহ দেখিয়া জোরে জোরে খাইতে লাগিল। কিন্তু তাহাদের পকেটের পয়সার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। তাহারা পয়সার কথা ভুলিয়া গিয়াছে, উহারা মনে করিতেছে ইহা গ্রাম্য পরিবেশের বিবাহ অনুষ্ঠানের আহার খাইতেছে। মনে হইতাছে করিম ও রহিম ভোজন পূজার প্রতিযোগিতা করিতেছে। ভোজন পক্রিয়া শেষ হইল। ওয়াশরুমে হাত মুখ ধৌত করিয়া গোছগাছ করিতেছে হোটেলের বাহিরে। ওই মহুর্তেই হোটেল কোষাধ্যক্ষ খাতা খুলিয়া হিসাব বলিল। উহাদের মোট দুইশো নব্বই টাকা হইয়াছে। হঠাৎ করিয়া মাথায় হাত রহিম ও করিমের। করিম কোষাধ্যক্ষক কে কহিল, আমরা দুই মিত্র টাকা দিতেছি কিছুক্ষণ পরে, একটু এই মাচাটায় শুইয়া লই। আমাদের শরীর আর চলিতেছে না। হাসফাস করিতেছে। কোষাধ্যক্ষ মনে মনে ভাবিল, ইহারা প্রচুর খাইয়াছে ইহার জন্যই অসুবিধে বোধ হইতেছে । বিশ্রামের প্রয়োজন রহিয়াছে। এই ভাবিয়া কোষাধ্যক্ষ হোটেলের অন্দরমহলে চলিয়া গেল। রহিম ও করিম দুই মিত্র মিলিয়া শুইয়া পড়িল হোটেলের মাচায়। পাশেই রহিয়াছে বড় নদী। নদীটা চলিয়া গিয়াছে সূদূর রাজধানীতে। নদীর ওই তীরে শহর রহিয়াছে। উহারা ওখানে যাইবার জন্যিই আসিয়াছিল। দুই মিত্র মিলিয়া ফিসফিস করিয়া কি যেন ওরা দুইজনে কহিল। এবং কিছুক্ষণ পরে দুই মিত্র মিলিয়া বিবাদে লিপ্ত হইয়া গেল। তাহাদের কর্মকাণ্ড হোটেলের লোকেরা দেখিতে লাগিল। একজন মিত্র কহিল ওই যে দূরে তালগাছ দেখা যাইতেছে উহা ছুঁইতে হইবে। তাহলেই জানিব খাওয়ার পরে দৌড়াইতে কে বেশি পারে। ইহায় আলোচনা হইতেছে দুজনের মধ্যে । দুজনেরই পিঠে রহিয়াছে ব্যাগ। সকলে বলিল ঠিক আছে একসঙ্গে প্রতিযোগিতা হউক। ফলে বুঝিতে পারিব কে প্রতিযোগিতায় প্রথম হইল, আর কে হারিলো। ইহা সবার মনব্রত হইল। উহারা একসঙ্গে দৌড়াইতে লাগিল। দৌড়াইতে দৌড়াইতে তাহারা তালগাছ ছাড়িয়া স্টেশনের দিকে পলায়ন করিল। তাহাদের পলায়ন দেখিয়া সবাই বুঝিতে পারিল যে, উহারা বাটফার। কেহ কেহ মুসলিমদের জাত তুলিয়া গালি দিল। জাত তুলিয়া গালি দিতেই আরো মুসলিম খদ্দেরেরা খেঁপিয়া উঠিল। হোটেল মালিক ও কর্মচারিগণকে মারিবার উপক্রম হইয়া উঠিতেই হোটেল পক্ষ ক্ষমা স্বিকার করিল। এবং উক্ত প্রসঙ্গেই উহারা হোটেলের বিল না মিটিয়া উগ্র মেজাজ হইতে বাহির হইয়া গেল। হোটেল মালিকের আজ বড় লোকসান হইয়া গেল, সে বুক ফাটাইয়া ক্রন্দন করিতে লাগিল। রহিম ও করিম সময় বুঝিয়া রেলে উঠিয়া পড়িল। টিকিট না কাটিয়া রেলে উঠিয়া পড়িল। যাইতে যাইতে কর্মস্থলে নামিয়া পড়িল। পূর্ব হইতেই কর্মক্ষেত্র পাকা হইয়াই ছিল, ইহাতে নতুন করিয়া কর্মস্থল খুঁজিতে হইল না। উহারা ধান কাটিবার জন্য লাগিয়া পড়িল। প্রতিদিন মালিকের ধান কাটাই বাছাঁই করিতে হয়। ওই গ্রামটা অনেকটা আবাং ছিল, কেন না গ্রামটি ছোট জাতী দিয়া বেষ্টিত। উহারা খুবই সহজ সরল। একদিন হইল কি মালিকের বাড়ির পাশেই একজনের কন্যার ভূতে ধরিল। উহারা বদ্দি, হেকিম দেখাইয়া ভালো করিতে পারিতেছে না। ইহা শুনিয়া দুই মিত্র দেখিতে যাইল। এবং দেখিয়া বুঝিল মেয়েটির ভূতে ধরিয়াছে। করিম ছুলছুলি একটু আধটু নামাজ টামাজ পড়িত। ভূত টুত তাড়াইতে পারিত। তাহার কিছু মুসলমানি মন্ত্র জানা আছে। করিম কহিল ইহা আমি এক চুটকিতে ভালো করিয়া দিতে পারি। তাহার জন্য বিস্তার খরচ হইবে। রোগীর পরিবারেরা সু অবস্থাজনক থাকায় মোটা টাকার দাবি করিল করিম। তাহারা কহিল সুস্থ করিতে পারিলেই উহাদের ধার্যিত টাকা