Mondal Sahitya Samagra: মণ্ডল সাহিত্য সমগ্র
By NK Mondal
()
About this ebook
About the book:
মণ্ডল সাহিত্য সমগ্র হল ভারতীয় প্রখ্যাত ইবুক লেখক এন.কে. মণ্ডল রচিত গল্প সমগ্র নিয়ে একটি গ্রন্থ। সংকলিত গ্রন্থ। এই পুস্তকে রয়েছে কিশোর সাহিত্য, রোমাঞ্চকর সাহিত্য, প্রাপ্তবয়স্ক সাহিত্য, সমস্ত গল্প কাল্পনিক। এন.কে. মণ্ডল স্যারের উক্ত গ্রন্থটি বাংলা সাহিত্যে এক অনবদ্য নিদর্শন হিসাবে গ্রহণ যোগ্য হয়েছে। বিভিন্ন দৈনিক পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত গল্প রয়েছে। তিনি অনেক অনেক বাস্তবতা ও রোমান্টিক ফুটিয়ে তুলেছেন তাঁর লেখায়। কিন্তু তিনি জীবনের এই প্রান্তে এসে সাহিত্য ফুটিয়ে তুলছেন যা অনবদ্য হিসাবে বিবেচিত সাহিত্য মহলে।
About the author:
এন.কে. মণ্ডল ( সেলিম ) হল একজন ভারতীয় কবি, সাহিত্যিক,মানবতাবাদী, হিউম্যানিস্ট, সোশ্যালিস্ট,দার্শনিক ও লেখক। তিনি ২০১৯ সালে সাহিত্য রত্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। ন্যাশনাল সাহিত্য পরিষদীয় প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তিনি মূলত ডিজিটাল লেখক হিসাবেই ভারতবর্ষের আকাশে পরিচিত । তিনি কঠিন পরিশ্রম করে উঠে এসেছেন লেখকতার জীবনে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ভ্রান্ত বিশ্বাস ও গোঁড়ামি, নাস্তিকতা , বর্তমান ধর্ম, ভালোবাসা, ইত্যাদি।
Reviews for Mondal Sahitya Samagra
0 ratings0 reviews
Book preview
Mondal Sahitya Samagra - NK Mondal
Mondal Sahitya Samagra
মণ্ডল সাহিত্য সমগ্র
BY
NK Mondal
pencil-logo
ISBN 9789354589058
© NK Mondal 2021
Published in India 2021 by Pencil
A brand of
One Point Six Technologies Pvt. Ltd.
123, Building J2, Shram Seva Premises,
Wadala Truck Terminal, Wadala (E)
Mumbai 400037, Maharashtra, INDIA
E connect@thepencilapp.com
W www.thepencilapp.com
All rights reserved worldwide
No part of this publication may be reproduced, stored in or introduced into a retrieval system, or transmitted, in any form, or by any means (electronic, mechanical, photocopying, recording or otherwise), without the prior written permission of the Publisher. Any person who commits an unauthorized act in relation to this publication can be liable to criminal prosecution and civil claims for damages.
DISCLAIMER: This is a work of fiction. Names, characters, places, events and incidents are the products of the author's imagination. The opinions expressed in this book do not seek to reflect the views of the Publisher.
Author biography
এন.কে. মণ্ডল ( সেলিম ) হল একজন ভারতীয় কবি, সাহিত্যিক,মানবতাবাদী, হিউম্যানিস্ট, সোশ্যালিস্ট,দার্শনিক ও লেখক। তিনি ২০১৯ সালে সাহিত্য রত্ন পুরস্কারে ভূষিত হন। ন্যাশনাল সাহিত্য পরিষদীয় প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট। তিনি মূলত ডিজিটাল লেখক হিসাবেই ভারতবর্ষের আকাশে পরিচিত । তিনি কঠিন পরিশ্রম করে উঠে এসেছেন লেখকতার জীবনে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হল ভ্রান্ত বিশ্বাস ও গোঁড়ামি, নাস্তিকতা , বর্তমান ধর্ম, ভালোবাসা, ইত্যাদি।
Contents
জ্যান্ত কবজ
বোম আবিষ্কার
কিশোর গল্প
জামদানী শাড়ি
অধপতন ১৮ +
ভূতের ভেলকি
প্রেমিক পরিবর্তন
বিচ্ছেদ
প্রেমের ছ্যাঁকা
প্রত্যাবর্তন
বোতল আবিষ্কার
পাঁচুদার বনগ্রাম ভ্রমণ
ফটিক বাবুর পোকার চাষ
নুটু বাবুর সাইকেল
বিজ্ঞানী
বড়মা
রঙ বাহারী
চাষার ডাক্তারি
পুটু
আলুর ব্যবসা
পাঁঠার দাঁড়ি
প্রেম
জ্যান্ত কবজ
বক্সিগঞ্জের এক পাড়াগাঁয়ে রহিম এবং করিম ছুলছুলি (ডাকনাম) বলিয়া দুইজন বসবাস করিত। উহারা গ্রামের মধ্যে নানান বিবাদে জড়িয়া পড়িত। তাহারা এক প্রকার বদমাইশ ছিল। এমনিতেই বক্সিগঞ্জ সুবিধাজনক ছিল নাই। সারাদিন চুরি চামারি হিংসা বিদ্দেষ উগ্রমেজাজ লেগেই থাকিত। উহারা মুসলমান হওয়ার জন্য উহাদের গাঁয়ের লোকে মান্য করিত। অল্প অল্প সময়ে নামাজ পড়িত। বয়স্ক ছিল মোটামুটি পঞ্চাশ কি বাহান্ন হইবে। তাহারা গ্রামে নানান অপকর্মে জড়িত ছিল। নানান মামলা মোকাদ্দামা। এক সময় বক্সিগঞ্জে ওলাওঠা রোগ হইয়া মৃত্যু হইয়াছিল অনেকের, সে সুজোগে উহারা সিঁধ কাটিয়া চুরি করিয়া কিছু কামাইয়া নিয়াছে। সেসব মালকড়ি ফুরাইতেই উহাদের চিন্তা হইল কিভাবে তাহারা সংসার চালাইবে। রহিম ও করিম দুই বন্ধু মিলিয়া যুক্তি করিল যে, তাহারা বিদেশে যাইবে কাজের সঁন্ধানে। বিদেশে যাইয়া কিছু কামাই করিয়া গৃহের দিকে ফিরিবে, নচেৎ ফিরিবে না। উহারা বৌ বাচ্চা রাখিয়া, একদিন প্রভাত হইবার পূর্বেই বাহির হইয়া যাইল। প্রভাত যখন হইল, তখন রেলস্টেশন পৌঁছাইয়া গিয়াছে। উহারাদের তখন উদর ভোজনের প্রয়োজন পড়িয়া গেল। শহরে কি আর বিনা পয়সায় কেইবা খাইতে দিবে। পোটলাতে কিছু খাবার ও কাজ করিবার যন্ত্রপাতি রহিয়াছে। উক্ত খাবার এখনই খাইয়া লইলে সমস্ত পথে কি খাইবে ভাবিতে লাগিল। করিম ছুলছুলি ভাবিতে ভাবিতে একটা উপায় বাহির করিল। যে উহারা বিনা পয়সায় খাইবে পেট পুরিয়া। করিম যুক্তিটা রহিমের কর্ণমূলে ফিসফিস করিয়া প্রবেশ করিয়া দিল। রহিম করিমের যুক্তিতে রাজি হইয়া একটা শহরের বড় হোটেলে যাইয়া চেয়ারে বসিয়া পড়িল। ভাত মাছ মাংস দই ইত্যাদি অর্ডার করিল। কিছুক্ষণ পরে হোটেলের এক কর্মচারি আসিয়া উহাদের সম্মুখে অর্ডার করা নানান খাবার উপস্থাপন করিয়া চলিয়া গেল। রহিম ও করিম চট জলদি গোগ্রাসে খাইতেছে। ইহা দেখিয়া আশে পাশের ভোজনকারীগণ উহাদের ভোজন পক্রিয়া দেখিতেছে। বারবার ভাত মাছ মাংস ডাল আনিতে আনিতে বিরক্ত হইয়া যাইতেছে হোটেলের কর্মচারীবৃন্দ। অনেকে হা হা করিয়া হাসিতেছে। আবার কেউ রুমাল দিয়া মুখ আবৃত করিয়া হাসিতেছে। ইহা দেখিয়া অনেকের ভোজন উঠিয়া গেল। অনেকে হাত তালি দিতেছে। কেহ সাহস দিতেছে আরো খাইবার জন্য। রহিম ও করিম উহাদের উৎসাহ দেখিয়া জোরে জোরে খাইতে লাগিল। কিন্তু তাহাদের পকেটের পয়সার দিকে বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। তাহারা পয়সার কথা ভুলিয়া গিয়াছে, উহারা মনে করিতেছে ইহা গ্রাম্য পরিবেশের বিবাহ অনুষ্ঠানের আহার খাইতেছে। মনে হইতাছে করিম ও রহিম ভোজন পূজার প্রতিযোগিতা করিতেছে। ভোজন পক্রিয়া শেষ হইল। ওয়াশরুমে হাত মুখ ধৌত করিয়া গোছগাছ করিতেছে হোটেলের বাহিরে। ওই মহুর্তেই হোটেল কোষাধ্যক্ষ খাতা খুলিয়া হিসাব বলিল। উহাদের মোট দুইশো নব্বই টাকা হইয়াছে। হঠাৎ করিয়া মাথায় হাত রহিম ও করিমের। করিম কোষাধ্যক্ষক কে কহিল, আমরা দুই মিত্র টাকা দিতেছি কিছুক্ষণ পরে, একটু এই মাচাটায় শুইয়া লই। আমাদের শরীর আর চলিতেছে না। হাসফাস করিতেছে। কোষাধ্যক্ষ মনে মনে ভাবিল, ইহারা প্রচুর খাইয়াছে ইহার জন্যই অসুবিধে বোধ হইতেছে । বিশ্রামের প্রয়োজন রহিয়াছে। এই ভাবিয়া কোষাধ্যক্ষ হোটেলের অন্দরমহলে চলিয়া গেল। রহিম ও করিম দুই মিত্র মিলিয়া শুইয়া পড়িল হোটেলের মাচায়। পাশেই রহিয়াছে বড় নদী। নদীটা চলিয়া গিয়াছে সূদূর রাজধানীতে। নদীর ওই তীরে শহর রহিয়াছে। উহারা ওখানে যাইবার জন্যিই আসিয়াছিল। দুই মিত্র মিলিয়া ফিসফিস করিয়া কি যেন ওরা দুইজনে কহিল। এবং কিছুক্ষণ পরে দুই মিত্র মিলিয়া বিবাদে লিপ্ত হইয়া গেল। তাহাদের কর্মকাণ্ড হোটেলের লোকেরা দেখিতে লাগিল। একজন মিত্র কহিল ওই যে দূরে তালগাছ দেখা যাইতেছে উহা ছুঁইতে হইবে। তাহলেই জানিব খাওয়ার পরে দৌড়াইতে কে বেশি পারে। ইহায় আলোচনা হইতেছে দুজনের মধ্যে । দুজনেরই পিঠে রহিয়াছে ব্যাগ। সকলে বলিল ঠিক আছে একসঙ্গে প্রতিযোগিতা হউক। ফলে বুঝিতে পারিব কে প্রতিযোগিতায় প্রথম হইল, আর কে হারিলো। ইহা সবার মনব্রত হইল। উহারা একসঙ্গে দৌড়াইতে লাগিল। দৌড়াইতে দৌড়াইতে তাহারা তালগাছ ছাড়িয়া স্টেশনের দিকে পলায়ন করিল। তাহাদের পলায়ন দেখিয়া সবাই বুঝিতে পারিল যে, উহারা বাটফার। কেহ কেহ মুসলিমদের জাত তুলিয়া গালি দিল। জাত তুলিয়া গালি দিতেই আরো মুসলিম খদ্দেরেরা খেঁপিয়া উঠিল। হোটেল মালিক ও কর্মচারিগণকে মারিবার উপক্রম হইয়া উঠিতেই হোটেল পক্ষ ক্ষমা স্বিকার করিল। এবং উক্ত প্রসঙ্গেই উহারা হোটেলের বিল না মিটিয়া উগ্র মেজাজ হইতে বাহির হইয়া গেল। হোটেল মালিকের আজ বড় লোকসান হইয়া গেল, সে বুক ফাটাইয়া ক্রন্দন করিতে লাগিল। রহিম ও করিম সময় বুঝিয়া রেলে উঠিয়া পড়িল। টিকিট না কাটিয়া রেলে উঠিয়া পড়িল। যাইতে যাইতে কর্মস্থলে নামিয়া পড়িল। পূর্ব হইতেই কর্মক্ষেত্র পাকা হইয়াই ছিল, ইহাতে নতুন করিয়া কর্মস্থল খুঁজিতে হইল না। উহারা ধান কাটিবার জন্য লাগিয়া পড়িল। প্রতিদিন মালিকের ধান কাটাই বাছাঁই করিতে হয়। ওই গ্রামটা অনেকটা আবাং ছিল, কেন না গ্রামটি ছোট জাতী দিয়া বেষ্টিত। উহারা খুবই সহজ সরল। একদিন হইল কি মালিকের বাড়ির পাশেই একজনের কন্যার ভূতে ধরিল। উহারা বদ্দি, হেকিম দেখাইয়া ভালো করিতে পারিতেছে না। ইহা শুনিয়া দুই মিত্র দেখিতে যাইল। এবং দেখিয়া বুঝিল মেয়েটির ভূতে ধরিয়াছে। করিম ছুলছুলি একটু আধটু নামাজ টামাজ পড়িত। ভূত টুত তাড়াইতে পারিত। তাহার কিছু মুসলমানি মন্ত্র জানা আছে। করিম কহিল ইহা আমি এক চুটকিতে ভালো করিয়া দিতে পারি। তাহার জন্য বিস্তার খরচ হইবে। রোগীর পরিবারেরা সু অবস্থাজনক থাকায় মোটা টাকার দাবি করিল করিম। তাহারা কহিল সুস্থ করিতে পারিলেই উহাদের ধার্যিত টাকা দেওয়া যাইবে। করিম ও রহিম রুগীকে একলা নিয়া চলিয়া গেল একটি কক্ষে। দরজা বন্ধ করিয়া দিল। রহিম কহিল, এই ব্যাটা তুই কি পারবি ইহার রোগ সারাইতে। করিম কহিল ইহা তাহার কাছে জলভাত। করিম একখানা নিম পাতা সহ ডাল আনিয়া মুসলমানী মন্ত্র পড়িয়া পড়িয়া ডালের বারি মারিতেছে। তাহার সঙ্গে কি বিড়বিড় করিতেছে। রুগীর আওয়াজ বাহির পর্যন্ত শুনা যাইতেছে। কিসব আজে বাজে বকিতেছে। কিছুক্ষণ পরে রুগী বেহুস হইয়া পড়তেই তাহাকে জল ছিঁটিয়া জ্ঞান ফিরিয়া আনিল। পরেরদিন হইতে রুগী পুরাপুরি সুস্থ হইয়া যাইল। স্বাভাবিক হইয়া গেল। মাঝেমধ্যে ঝাড়ফুঁক করিতে আসিতেছে গ্রামের বাসিন্দাগণ । ইহাতে তাহাদের রোগ সারিয়া যাইতেছে। তাহাদের মোটা মোটা টাকা দিতেছে। মাঝেমধ্যে মাঠে ধানের জমিতে চলিয়া যাইতেছে রুগীগন, আর উহাতে ধানজমি মালেকের লোকসান হইয়া যাইতেছে । কাজ কম হইয়া যাইতেছে। তবুও জমি মালিক তাহাদের কিছুই বলিতেছে না। ইহা দেখিয়া রহিমের একটা কুচিন্তা মাথার মধ্যে চলিয়া আসিলো। সে রাত্র হইলে বলিবে করিমকে। সারাদিন কাজে লিপ্ত ছিল। সঁন্ধ্যা বেলায় কোন প্রকার কাজ না থাকায় তাহারা দুজনে পাড়া বেড়াইতে লাগিল। তাহাদের কথা লোকমুখে প্রচার হইয়া গিয়াছিল বলিয়া উহারা গ্রামে যথাযথ সম্মান পাইতেছে। যেখানে যাইতেছে সেখানেই খাতির যত্ন পাইতেছে। কেহ মিষ্টি খাওয়াইতেছে, আবার কেহ মোটা মাছ ভাত খাওয়াইতেছে। উহাদের আনন্দ আর ধরে না। রাত্রে রহিম কহিল করিমকে। এই সময়ে আমাদের কিছু কামাই করার সুযোগ রহিয়াছে। কামাই করিতে হইবে। করিম কহিল, কি করিয়া কামাইব। রহিম যুক্তি দিল যে, বাজার হইতে কিছু ঔষধ আনিতে হইবে। যেমন জ্বর, পাইখানা, আমাশা, কাশি, চুলকানি, গ্যাস। যন্ত্রণা। ইহা আনিয়া রাইখা দিতে হইবে আর কিছু মুসলমানী তাবিজ কবজ বাইনাইতে হইবে। উহাদের জ্বর জ্বালা হইলে দু চারটে বড়ি আর একটা দুটা মুসলমানী তাবিজ কবজ দিতে হইবে। ইহার জন্য বসিয়া বসিয়া মোটা টাকা রোজগার করা যাইবে। করিম রহিমের কথা শুনিয়া একশো কোশ দূরে বাজার হইতে ঔষধ, তাবিজ কবজ কিনিয়া নিয়ে আসিলো। উহারা প্রতিদিন বিকালে বসিয়া যায় একটি ঘর ভাড়া লইয়া। বিকেল বিকেল ঝাঁকে ঝাঁকে রুগীরা আসিতেছে। জ্বর সর্দি, পাইখানা, বমি ইত্যাদি হইতাছে। উহারা ওই ঔষধ দিতেছে আর তাবিজ কবজ দিতেছে। আর অনেক অনেক টাকা রোজগার হইতাছে। উহারা একদিন এক ফঁন্দি বাহির করিল, যাহারা রুগী নয় তাহাদের কাছ হইতে কিভাবে রোজগার করা যাইবে। উহারা বাঁশতলা হইতে কিছু কুকুরমাছি ধরিয়া তাবিজের মধ্যে চালান করিয়া দিল এবং উহাতে কিছু পরিমাণ খাদ্য প্রবেশ করিয়া এবং তা বাহির থেকে সিল করিয়া দিল। এবং সবার মাঝে বলিতে লাগিল যে, ইহা যে ব্যক্তি ধারণ করিবে উহার বড় বড় রোগ হইবে না এবং উহাদের অল্প অল্প রোগ হইবে। কম রোগ হইবে। ইহা বলিয়া সারা গ্রামে খবর বাষ্ট করিয়া দিল। একদিনের মধ্যেই হাজার হাজার লোক আসিয়া উহা কিনিতেছে। রহিম ও করিম বলিতেছে নিয়ে যান নিয়ে যান রোগ নিরাময়ী জ্যান্ত কবজ। তাহারা প্রচুর পরিমাণে অর্থ উপার্জন করিল। তাহাদের পূর্বে বিশ্বাস করিয়াছে গ্রামের মানুষ। এই করিয়া অনেক টাকার মালিক হইয়া গেল তাহারা। একদিন ইহাদের কর্মকাণ্ড ফাঁস হইয়া যাইতেই উহাদের মারতে আসিতেছে গ্রামবাসী। উহারা তা শুনিতে পাইয়া দৌড়াইয়া পলায়ন করিল শহরের দিকে। তাহারা স্বগৃহে আসিয়া বিঘা বিঘা জমি কিনিল, বাড়ি বানাইল। ব্যাবসা করিল, তবে রহিমের ভাগ ছিল মাত্র দেড়ভাগ। আর সবই করিম ছুলছুলির। কিন্তু গোণ্ডক গ্রামের রোগ আসলেই ভালো হইতেছিল, কিন্তু তাবিজ কবজ করিতেই উহাদের ব্যবসা উঠাইয়া গেল। এখন তাহারা পস্তাইতেছে উহাদের তাড়াইয়া কি ভূল করিয়াছে। আর রহিম করিম দুই মিত্র মিলিয়া সুখে বসবাস করিতে লাগিল। তাহাদের গ্রামের লোকে খুব মান্য করিতে লাগিল। দোতলা বাড়ি, অনেক ধানিজমি, ব্যবসা। উহাদের পূর্বের জঙ্গিপনা কাজ অর্থাৎ চুরি, ডাকাতি, ধর্ষন, খারাপ কাজ ধনী হওয়ার তাগিদে সব ঢাকিয়া পড়িল। এখন উহারা গ্রামের মাতব্বর হইয়া দেশ চালাইতেছে। তাহারা সমাজের বিচার করিয়া অর্থ কামানোর উপায় বাহির করিয়াছে। গ্রামের ভোলাভালা মানুষগুলিকে পাইয়া মজা করিতেছে। উহার সঙ্গে সামাজিক অর্থ নিয়া নিজেদের উদর ভর্তি করিতেছে।
সমাপ্ত ----
শ্রেষ্ঠ কথা ইহা হইল যে, মন্দ স্বভাবের লোক হাজার ভালো কর্ম করিব ভাবিলেও উহা ভালো হইবে না মন্দই হইবে। কেননা উহাদের অন্তর হইতে এখনো লোভ পরিত্যাগ হয়ে উঠেনি। আর যদিও বা হয় তা হয়ত লক্ষে একটি বা একজন হইতে পারে।
বোম আবিষ্কার
প্যালারাম সদ্য চাকুরি পেয়েছে। স্কুলে পড়াশোনাতে তেমন একটা মাথা না থাকলেও যন্ত্রপাতি নিয়ে বেশ তৃক্ষ্ণ জ্ঞান আছে। ছোট থেকে এটা সেটা তৈরি করতে বেশ পটু ছিল। যখন তখন জিনিস আবিষ্কার করতে একদম ওস্তাদ বটে। কলেজ লাইফেই চাকরিটা পেয়েছে, তা একদম রীতিমত সরকারি লোক এসে দিয়েছে। এমন কি সরকারি অফিসারগন এসে হাতে পায়ে ধরে চাকুরিটা দিয়েছে বল্লেই চলে। তাই প্যালারাম সবকিছু ভুলে চাকরিতে জয়েন করেছে। এই চাকুরিটা মাস্টার কিম্বা কোন অফিসারের নয়, খোদ কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞান মঞ্চ ৷ অর্থাৎ চাকুরিটা হল বোম আবিস্কার করার জন্য ৷ পরমাণু বোম ৷ কে জানে কিভাবে জানলো সরকারি লোকেরা ৷
|| দুই ||
প্যালারাম প্রথমদিন বিজ্ঞানাগারে প্রবেশ করেই যা দেখলো হল নানান যন্ত্রপাতিতে ভরপুর ৷ নানা ধরণের ল্যাবটরিক জিনিস পত্র ৷ কি নেই সেখানে ৷ হাতের কাছেই সব আছে ৷ চারিদিক ঘুরে ঘুরে দেখলো ৷ একজন গাইড ছিল, তিনি বললেন চলুন স্যার আপনাকে বোমের কাছ ঘুরিয়ে নিয়ে আসি ৷ হ্যাঁ হ্যাঁ এক্ষুনি চলুন ৷ কিছুক্ষন পরে প্যালারাম ও গাইডম্যান এসে পৌঁছালেন বোমের কাছে ৷ প্যালারাম বোমের তলা থেকে নিচু পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নিলো কয়েকবার ৷ দম নিয়ে বলল বাব্বা এত বড় বোম ৷ প্যালারাম সরকারের দেওয়া বাড়িতে চলে এসে জব্বর ঘুম লাগালো ৷ ওদিকে খাবার হয়ে এসেছে ৷ দুপুরের খাবার ৷ স্নান করেই খাবে ৷ কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নেওয়ার পর দুই হাত ছড়িয়ে হাই তুলল ৷ প্যালারামের একটি বদ অভ্যাস আছে খিদে পেলে আগে খাওয়া তারপর কাজ, সে যতবরই কাজ হোক না কেন ৷ বারির পরিচারিকা খাবারের টেবিলে সাঁজিয়ে রেখে প্যালারামকে বলেছে ৷ প্যালারাম ঘুম থেকে উঠেই সরাসরি টেবিলে বসে পড়েছে ৷ দুপুরের স্নান না করেই ৷ মুখ না ধুয়েই ৷ তবুও সে বিজ্ঞানী ৷ বাড়ির পরিচারিকা প্যালারামের খাওয়া দেখেই মৃদু মৃদু হাসছে ৷ কেন না সে হাত মুখ স্নান না করেই খেতে শুরু করেছে ৷ প্যালারাম গোগ্রাসে গিলছে ৷ মাছ মাংস পাঠার ঠ্যাং আর কত খবার ৷ প্যালারাম এই ত চাই ৷ প্যালারামের জীবনে আর কিছুই চাই না , শুধু আর একটি চাওয়া ৷ সুন্দর পাতলা মেদহীন একটি স্ত্রী ৷ চারিদিকের ম্যাগাজিন থেকে শুরু করে দেশের ব্র বড় পত্রিকা, নিউজ চ্যানেল চালাচ্ছে প্রচার ৷ ডিজিটাল বোম বিজ্ঞানী প্যালারাম পাঠক ৷ অথচ গবেষনার কাজে চারদিন হয়ে গেল, এখনো কাজেই লাগেনি সে ৷ বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক সেদিক ৷ পার্ক সিনেমা হল আড্ডা ইত্যাদি ৷ এসব অবশ্য বিজ্ঞানীরা করে থাকে ৷ আর গবেষনা হয় বিজ্ঞানীদের ইচ্ছামত ৷ কোন টাইম টেবিল নেই ৷ ওদিকে বড় বড় প্রচার চলছে ৷ এ নিয়ে সরকারি রাজনৈতিক দল অনেক বড় বড় কথা বলছে ৷ বিপক্ষ দলেরা টাকা আত্মসাৎ করার কথা বলছে ৷
|| তিন ||
সেদিন ছিল সোমবার ৷ বিকেলের সময় ৷ ফুরফুরে হালকা বাতাস বইছে উত্তর দিক থেকে ৷ প্যালারামের মনটা তখন ভালোই আছে ৷ হঠাৎ প্যালাবাবু সিকিউরিটি কে বললেন, যাও ড্রাইভার কে গাড়ি বের করতে, আমি ল্যাবে যাব