গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা (বিদেশি গল্পসংগ্রহ)
By খোরশেদ শাহীন
()
About this ebook
মোট এগারটি গল্প রয়েছে এই গ্রন্থে। বিশেষ কোন ধারায় ফেলা যাবে না গল্পগুলোকে। পৃথিবী খ্যাত লেখকদের বিভিন্ন স্বাদের একটি অনন্য গল্প সংকল্ন। সামার সেট মম, নারবাদী লেখক কেট চোপিনের 'এক ঘন্টার গল্প', হাঙ্গেরীর বিখ্যাত গল্পকার অরকেনি ইস্টভান, 'ত্রিরত্নের নৌবিহার' খ্যাত বিখ্যাত রম্য লেখক জেরম কে জেরম, রোয়েল দাল, সাকি প্রমুখ গল্পকারের অনিন্দ্য সুন্দর গল্প রয়েছেি এই সংকল্নে। গ্রন্থটি প্রথম স্ম্যাশওয়ার্ডেই প্রকাশিত হল। ছাপার কাগজে এখনো প্রকাশিত হয় নি। যাদের গল্প রয়েছে:
বিপদের বন্ধু/সামারসেট মম
কবিতার জাদুকরী সঙ্গীত/অরকেনি ইস্টভান
এক ঘন্টার গল্প/কেট চোপিন
একটি ক্ষুদ্র উপকথা/ফ্রাঞ্জ কাফকা
গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা/আরউইন শ
কুকুর হইতে সাবধান/রোয়েল দাল
আলপাইনের বিবাহ-বিচ্ছেদ/রবার্ট বার
দক্ষণের লোক/ রোয়েল দাল
ভাগ্যে বিশ্বাস ছিল না যার/ জেরোম কে জেরোম
খোলা জানালা/ সাকি
আকাশে ঘোড়সওয়ার/ অ্যামব্রোস বিয়ারসি
Reviews for গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা (বিদেশি গল্পসংগ্রহ)
0 ratings0 reviews
Book preview
গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা (বিদেশি গল্পসংগ্রহ) - খোরশেদ শাহীন
বিদেশি গল্পসংগ্রহ
গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা
অনুবাদ
খোরশেদ শাহীন
‘গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা’ খোরশেদ শাহীন কর্তৃক স্মেশওয়ার্ডে-এ প্রকাশিত
স্বত: অনুবাদক
প্রচ্ছদ: মনিরুল মনির
Greshsher Poshak Porihito Meyera
Published by Khurshed Shaheen at Smashwords
Cover Degin: Monirul Monir
Copyright 2016 Khurshed Shaheen
Smashwords Edition, License Notes:
This ebook is licensed for your personal enjoyment only. This ebook may not be re-sold or given away to other people. If you would like to share this book with another person, please purchase an additional copy for each recipient. If you’re reading this book and did not purchase it or it was not purchased for your use only then please return to your favorite ebook retailer and purchase your own copy. Thank you for respecting the hard work of this author.
উৎসর্গ
ড. এ টি এম এমদাদ হোসেন
ভূমিকা
এখানকার পাঁচটি গল্প সামহয়্যারইনব্লগে প্রকাশ করেছিলাম। এর মধ্যে একটি গল্প ব্লগার ডি মুন ফেসবুক পেইজ ‘গল্পঘুড়ি’তে প্রকাশ করেছিলেন। এই গল্প কয়েকটি নিয়ে ওয়াটপ্যাড ডটকমে ‘বিদেশি গল্পসংগ্রহ’ নামে আমার একটি ভার্চূয়াল বইও আছে। কাগজের পাতায় কোন গল্পই ছাপা হয় নি এ পর্যন্ত। তবে কিছুদিন আগে ছোট কাগজ ‘আলোক বর্তিকা’র জন্য একটি গল্প পাঠিয়েছি। বাকি সব গল্পই কোথাও প্রকাশিত হয় নি।
সামারসেট মম আমার প্রিয় লেখকদের একজন। তার লেখার ধরণ হৃদয় স্পর্শ করে এবং প্লটও অসাধারণ হয়। ‘বিপদের বন্ধু’ গল্পের বার্টনকে আমি যেন আশেপাশেই দেখতে পাই। কেট চোপিনের নারীবাদী গল্প ‘এক ঘন্টার গল্প’ এখন অনেক জনপ্রিয়। কিন্তু লেখিকা অনেক পুরনো, জন্ম ১৮৫০ সালে আমেরিকায়। তার জীবনও একটা গল্প। আরইউন শ আমার আরেকজন প্রিয় লেখক। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তার ‘ভয়েস অব সামার’ উপন্যাসটি প্রথম পড়ি। ‘গ্রীষ্মের পোশাক পরিহতি মেয়েরা’ তার অন্যান্য লেখা থেকে একটু আলাদা মনে হয়।
কাচিকার সাথে কথা হত একটি চ্যাট রুমে। বুদাপেস্টের মেয়ে। ও-ই আমাকে গল্পটার কথা বলেছিল, টেলিফোন বুথের গল্প। আমি তো পড়ে অভিভূত! মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছে করে সেই চার লাইনে আসলে কী ছিল! লেখক অরকেনি ইস্টভানকে(জন্ম ১৯১২) স্মরণ রাখতে বুদাপেস্টে একটি ডামি টেলিফোন বুথ স্থাপন করা হয়েছে যা দেখতে পর্যটকরা ভীড় করে সেখানে।
খোরশেদ শাহীন
হিলভিউ আ/এ, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
সূচিপত্র
ভূমিকা
বিপদের বন্ধু/সামারসেট মম
কবিতার জাদুকরী সঙ্গীত/অরকেনি ইস্টভান
এক ঘন্টার গল্প/কেট চোপিন
একটি ক্ষুদ্র উপকথা/ফ্রাঞ্জ কাফকা
গ্রীষ্মের পোশাক পরিহিত মেয়েরা/আরউইন শ
কুকুর হইতে সাবধান/রোয়েল দাল
আলপাইনের বিবাহ-বিচ্ছেদ/রবার্ট বার
দক্ষণের লোক/ রোয়েল দাল
ভাগ্যে বিশ্বাস ছিল না যার/ জেরোম কে জেরোম
খোলা জানালা/ সাকি
আকাশে ঘোড়সওয়ার/ অ্যামব্রোস বিয়ারসি
লেখক পরিচিতি
বিপদের বন্ধু
সামারসেট মম
ত্রিশ বছর ধরে আমি আমার সঙ্গীদের লক্ষ্য করছি। আমি তাদের সম্পর্কে খুব একটা ভাল জানি না। মুখাবয়ব যাচাই করে কোন কিছু বলতে আমি দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ি, তুবও আমার মনে হয়, লোকজনকে যাচাই করার ক্ষেত্রে মুখটাকে আমরা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। মুখাবয়ব, তাকানোর ভঙ্গি, চোয়ালের গঠন দেখে আমরা সিদ্ধাগুলো নিই। এই ভেবে অবাক লাগে এতে ঠিকের চেয়ে বেঠিকই বেশি হয় কি-না। কোন উপন্যাস বা নাটক বাস্তবতার বিচারে এত অমিল কারণ লেখকেরা, হয়তো প্রয়োজনেই, তাদের চরিত্রগুলো নিখুঁতভাবে তৈরি করে। তারা এগুলো স্ববিরোধী হিসাবে তৈরি করতে পারে না, এতে করে চরিত্রগুলো অবোধগম্য হয়ে পরে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগই স্ববিরোধীদের মধ্যে পড়ি। আমরা হলাম সামঞ্জস্যহীন কতগুলো গুণের খিচুরি। অনিচ্ছায় আমি ঘাড় ঝাঁকাতে বাধ্য হই যখন দেখি কেউ বলে যে কোন লোক সম্পর্কে তারা প্রথম যে ধারণাটা করে তাই সঠিক। আমার মনে হয় তাদের অন্তর্দৃষ্টির পরিসর খুব ছোট অথবা তারা খুবই অহংকারী। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হল এ রকম যে কাউকে আমি যত দীর্ঘদিন ধরে চিনি ততই সে আমাকে ধাঁধায় ফেলে দেয়। আমার পুরোন বন্ধুদের সম্পর্কে আমি শুধু এটাই বলতে পারি, তাদের সম্পর্কে প্রধান বিষয়টাই আমি জানি না।
আমার ভেতর এই রকম বোধগুলো উদয় হওয়ার কারণ হল, সকালের খবরের কাগজে পড়েছিলাম কোবেতে এডওয়ার্ড হাইড বার্টন মারা গিয়েছে। তিনি ছিলেন বণিক। ব্যবসার জন্য জাপানে অনেক বছর কাটিয়েছন। আমি তাকে খুব কমই জানতাম, কিন্তু তার বিষয়ে আমার আগ্রহ ছিল কারণ সে একবার আমাকে দারুণ বিস্মিত করেছিল। আমি যদি গল্পটা তার নিজের মুখ থেকে না শুনতাম কখনোই বিশ্বাস করতাম না যে তিনি এ রকম কাজ করতে পারেন। ঘটনটি আরো চমৎকৃত করেছিল এই কারণে যে তার চেহারা ও আচার-আচরণে বিশিষ্টতা প্রকটভাবে ফুটে উঠতো। তিনি যেন একজন পরিপূর্ণ নিখুঁত মানুষ। ছিলেন ক্ষুদে-কৃশকায় এবং খুবই হালকা পাতলা। উচ্চতায় মোটেই পাঁচ ফিট চারের চেয়ে বেশি হবেন না। সাদা চুল, ভাঁজ পড়া লাল মুখ ও নীল চোখ। আমার মনে হয় তার বয়স তখন ষাট হবে। পরিবেশ এবং বয়স বিবেচনা করে সব সময় পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি পোশাকআশাক পরতেন।
যদিও তার অফিস ছিল কোবেতে, বার্টন প্রায় ইয়োকোহামা আসতেন। ঘটনাক্রমে আমাকে সেখানে একবার দিন কয়েক কাটাতে হয়েছিল জাহাজের অপেক্ষায়, এবং তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল ব্রিটিশ ক্লাবে। আমরা দু জন এক সাথে ব্রিজ খেলেছিলাম। তিনি ভাল খেলেছিলেন এবং যাকে বলে হাত খুলে তাই। খেলার সময় খুব একটা কথা বলেন নি কিংবা তারপরেও যখন আমরা পান করছিলাম তখনও, কিন্তু যা বলেছিলেন তা ছিল বিচারবুদ্ধিসম্পন্ন। শান্ত, রসকষহীন রসিকতা করতেন। ক্লাবে তাকে জনপ্রিয় মনে হল। পরে, যখন চলে গিয়েছিলেন, সবাই তাকে ক্লাবের একজন সেরা সভ্য হিসাবে বলাবলি করছিল। ঘটনাক্রমে আমরা দুজনেই গ্লান্ড হোটেলে অবস্থান করছিলাম এবং পরদিন তিনি আমাকে তার সাথে ডিনার করার আমন্ত্রণ করলেন। স্থূল বয়সী হাসিখুশি স্ত্রী ও দুমেয়ের সাথে দেখা হল। স্পষ্টত মায়ামমতার বন্ধনে পরিপূর্ণ পরিবার। বার্টনের ক্ষেত্রে যে ব্যাপারটি আমার চোখে লেগেছিল তা হল-তার সুহৃদতা। নীল চোখ দুটিতে খুব হৃদয়গ্রাহী কিছু একটা ছিল। মার্জিত কন্ঠস্বর, যে জন্য আপনার পক্ষ্যে কোনভাবেই কল্পনা করা সম্ভব হবে না যে ওই কন্ঠে কখনো রাগ তোলা সম্ভব। আমায়িক হাসি ছিল। মানুষ হিসাবে তিনি আপনাকে আকর্ষণ করতেন এই জন্য যে বন্ধুদের প্রতি সত্যিকারের ভালবাসার অনুভবটা তার কাছ থেকে পাওয়া যেত। একটা আকর্ষণ ছিল তার মধ্যে। বিরক্তকর কোন ভাব প্রবণতা ছিল না। পছন্দ করতেন কার্ড খেলা এবং ককটেল, ভাল মুখরোচক গল্প বলতে পারতেন পয়েন্ট ধরে ধরে; তারুণ্যে এথলেট জাতীয় কিছু একটা ছিলেন। ধনী হয়েছিলেন প্রতিটা পয়সা নিজে উপার্জন করে। আমার মনে হয় তাকে পছন্দ করার ক্ষেত্রে আর একটি বিষয় ছিল- তিনি অত্যন্ত ছোটখাট ও ভঙ্গুর প্রকৃতির ছিলেন। তিনি আপনার ভেতর আত্মরক্ষার সহজাত বোধটি জাগিয়ে তুলতেন। আপনি ভাবতেন সামান্য একটি মাছিকে আঘাত করার নিষ্ঠুরতাটুকুও বহন করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।
একদিন বিকেলবেলা আমি গ্লান্ড হোটেলের লাউঞ্জে বসেছিলাম। এটা ছিল ভুমিকম্পের আগে। চামড়ার হাতলযুক্ত চেয়ার ছিল ওদের ওখানে। জণাকীর্ণ বন্দরের বিসত্মৃত দৃশ্যপট দেখা যেত জানালা দিয়ে। সাংহাই, হংকং এবং সিংগাপুর হয়ে ভ্যাঙ্কুভার এবং সানফ্রান্সিসকো বা ইউরোপগামী বিশাল বিশাল জাহাজ থাকতো। সব দেশের যাত্রী ছিল। জাহাজের পশ্চাদভাগ পূর্ণ থাকতো সমুদ্রভ্রমণজীর্ণ বাতিল দ্রব্যাদির স্তুপে। আর থাকতো রঙবেরঙের পাল ও অসংখ্য সাম্পান। ব্যস্ততা আর কর্মচঞ্চল দৃশ্যপট, এবং তবুও, আমি জানি না কেন, আত্মার জন্য তা ছিল প্রশান্তির। শিহরণ ছিল এবং মনে হত তা আপনার মধ্যেই বিরাজমান কেবল একে ছুঁতে চাইলে হাতটাকে কেবল প্রসারিত করতে হবে এই যা। এই সময়ে বার্টন লাউঞ্জে আসায় আমার দৃষ্টিসীমার মধ্যে পড়লেন এবং পরে পাশের আসনটিতে জায়গা দখল করেন।
‘সামান্য পান করায় আপনার কোন আপত্তি আছে?’ একটা ছেলেকে উদ্দেশ্য করে হাততালি বাজালেন এবং দুজনের জন্য জিন আনতে বলেন।
ছেলেটি যখন নিয়ে আসছিল, একজন লোক ওই সময় বাইরের পথটুকু অতিক্রম করে যাওয়ার সময় আমাকে দেখে ইশারা করে হাত নাড়ায়।
‘আপনি টার্নারকে